Breaking News
Home / Breaking News / কবি রিটন মোস্তফা রিটন এর ⭐ ঈশ্বরের খোঁজে ⭐

কবি রিটন মোস্তফা রিটন এর ⭐ ঈশ্বরের খোঁজে ⭐

⭐ ঈশ্বরের খোঁজে ⭐
– রিটন মোস্তফা

ধরুন-
রাস্তার উপর পরে থাকা একটা ভাঙা ডিম, যেটা আউলে গেছে। এবার এর উল্টো দিক থেকে তিন জনকে আসতে বলুন ডিম পড়ে থাকার ঐ অবস্থানের কাছ দিয়ে। এরপর তিন জনের কাছেই জানতে চান রাস্তায় ডিম সম্পর্কিত কি দেখলেন?

– প্রথম জনের উত্তরঃ একটা ফাটা ডিম পড়ে আছে।

– ২য় জনের উত্তরঃ উপর থেকে পড়ে গিয়ে একটা ডিম ফেটে পড়ে আছে।

– ৩য় জনের উত্তরঃ কিভাবে যেন উপর থেকে পড়ে একটা ডিম ফেটে পড়ে আছে।

আপনার কাছে এই তিন জনের মধ্যে কার উত্তরটিকে আপনি পরিপূর্ণ বলবেন মানবেন এবং শতভাগ নাম্বার দেবেন? যদিও এই তিনটি উত্তরই একটি মাত্র জিনিসকেই চূড়ান্ত করছে এবং সত্য। তবে তিন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি আমরা দেখতে পাব। আর এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য। এই ধরণের মানুষের বা এই তিন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের সাথেই আমাদের বসবাস, চলাচল। যা হোক, এখানে একটি স্পষ্ট সূত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি, আর সেটা হলো-

কারণ – ঘটনা – ফলাফল

যেটা সব কিছুর ক্ষেত্রেই ফিক্সড। আমি জানি আমার পরের তথ্যটা অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আমিও বলছি না গ্রহণ করতেই হবে। আমার এই পর্ব গুলো আসলে “কোন কপি পেস্ট” না (চাইলে বর্তমান সময়ের সেরা সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে ট্রাই করুন)। এটা সম্পূর্ণ আমার অল্প জ্ঞানে “ঈশ্বরকে খোঁজার জন্য” দীর্ঘ দিনের বিভিন্ন ভাবনার একটা ব্যক্তিগত মিক্সিং প্রবন্ধ মাত্র।

যাইহোক উপরের তিন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলেছি। দেখেছি একটি সূত্র যা ফিক্সড। অর্থাৎ
কারণ + ঘটনা + ফলাফল।

এখন পরের যে বিতর্কিত তথ্যটা বলতে চেয়েছি সেটা একটু সংস্কারের মত করেই বলি। তাহলে কি আমাদের সহ প্রতিটি জিনিসের-
জন্ম + একটা সময় পর্যন্ত জীবন যাপন + মৃত্যু বা সমাপ্তি অথবা ফলাফলে এ নির্ধারিত?
তাহলে কি আমাদের জন্মের/সৃষ্টির (যে কোন কিছুর ক্ষেত্রেই) + বর্তমান + ভবিষ্যৎ এই তিনটিও ফিক্সড হতে পারে? যেখানে আমরা বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র কিছু ঘটনার মাধ্যমেই আমাদের ফলাফল বা সমাপ্তি নিশ্চিত বা বাস্তবায়ন করে চলেছি? যার সবটাই আগে থেকেই ফিক্সড?

এর আগে আমি ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি, এর ক্রমবর্ধমান বিকাশ, পৃথিবীর মত একটি “এলিট প্লানেট” তৈরির জন্য বিজ্ঞানের ভাষায় দীর্ঘ দীর্ঘ এবং দীর্ঘ সময় ধরে জীবনের উপযুক্ত করা, এবং সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনার মত প্রতিটি জীবনের বিকাশের একটা সরল উপস্থাপন করেছিলাম। সেখানে আরও গুরুত্ব দিতে পৃথিবীর পাশের চাঁদটিও পৃথিবীর থেকে এটা অংশ থেকে সৃষ্টি হলেও এই পৃথিবীর বাকি অংশের জীবন বৈচিত্র্য এবং জীবন ধারণের জন্য তার অনস্বীকার্য উপস্থিতির কারণ তুলে ধরে ছিলাম যদি “চাঁদ না থাকত” শিরোনামে। অর্থাৎ এখানে জীবন চাষাবাদের জন্য কি সূক্ষ্ম পরিকল্পনার মতই ঘটনা গুলোই ঘটেছে যা আমরা আমাদের বিজ্ঞানের দীর্ঘ দিনের গবেষণার থেকেই পেয়েছি এবং তাদের চোখেই আমিও দেখানোর চেষ্টা করেছি।

মূল প্রসঙ্গে আসি। এখানে আপনাকে বেছে নিতে হবে যে এই তিন জনের ডিম ফেটে পড়ে থাকার উত্তরের ধরণ থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে যে তিনটিই সত্যের মধ্যে প্রকৃত এবং মজবুত সত্য কোনটি-

– ডিম ফেটে পড়ে আছে?
– উপর থেকে পড়ে ডিম ফেটে পড়ে আছে?
– কে বা কিভাবে যেন উপর থেকে ডিম পরে যাবার কারণে ডিমটা ফেটে পড়ে আছে।

ধর্মীয় বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের ক্ষেত্রেও ঈশ্বরকে দেখার তিনটি দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। যার মধ্যে আমিও একজন। তিনটি সত্য উত্তর আছে। তবে এর মধ্যেই একটি অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হিসেবে বেছে নিতে হবে। এবং সেটা আমার পরবর্তি আলোচনাতেও জারি থাকবে। তবে কাউকে বিশ্বাস করানোর জন্য অথবা কারও বিশ্বাস ভাঙ্গার জন্য অবশ্যই না। শুধুমাত্র আমাদের ঈশ্বর কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবানাকে উস্কে দেবার জন্যই। সিদ্ধান্ত আপনাদেরকেই নিতে হবে। এর ফাঁকে ফাঁকে আমরা ধর্ম, বিজ্ঞান এবং বিশ্বাস এর বিভিন্ন তথ্য জানব। আলোচনা করবো।

আমরা জানি আমাদের এই ইউনিভর্স কত বড়। আসলে কত বড় বললেও প্রকৃত বড়র সঠিক একটা কল্পনা এই ছোট্ট কথার মাধ্যমে আপনাদের কল্পনাতে এঁকে দিতে পারবো না। কারণ, আমাদের গ্যালাক্সির এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব এক লাখ আলোকবর্ষ (আলো এক বছরে যতটুকু পথ পাড়ি দেয়, তাকে বলে এক আলোকবর্ষ)। অর্থাৎ মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাস এক লাখ আলোকবর্ষ। এবং আলো প্রতি সেকেন্ডে ৩,০০,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে।
এবং আমাদের অবজার্ভাল ইউনিভার্সেই (সর্বশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ইউনিভার্সের যতটুকু দেখি) এরকম মিল্কওয়ে গ্লাক্সির মত এতটাই অসংখ্য অসংখ্য এবং অসংখ্য রয়েছে যাকে এখানে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব না। শুধুমাত্র আমাদের সৌরজগৎ সহ আরও লক্ষ লক্ষ সৌরজগৎ নিয়ে এবং তাদের ট্রিলিওন গ্রহ নিয়ে যাদের একে অপরের দুরত্ব মাপতে গেলে গজ, ফিতা, কিলোমিটার হার মেনে লাইটট ইয়ারস বা আলোকবর্ষ ব্যবহার করতে হবে। তাহলে সম্পূর্ণ ইউনিভার্সের অস্তিত্ব একটু কল্পনা করুন। যেটা সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানের ভাষায় একটি “পয়েন্ট সিঙ্গুলারিটির” (বিন্দু) বিস্ফোরণ থেকে। অর্থাৎ এই যে ক্রমাগত প্রাসারিত বা ছুটে চলা ব্রম্মাণ্ড এবং তার ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন এবং ট্রিলিয়ন galaxy নক্ষত্র, গ্রহ উপগ্রহ, সহ বিভিন্ন অবজেক্ট সৃষ্টি হয়েছে। আরও যদি পরিষ্কার করে বলি তর্কের সুবিধার জন্য (বিজ্ঞানের ভাষায়) তবে বলতে হয় এই “পয়েন্ট অব সিঙ্গুলারেটির” হঠাৎই বিকাশ এবং বিস্ফোরণ (মুহুর্তের মধ্যেই বলা যাবে না, যদিও আন্দাজের সুবিধার জন্য বলা হয়) এর মধ্যমেই স্পেস এবং সময়ের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের এই থিউরি বলছে যে, যেহেতু এই “বিগব্যাঙ বিস্ফোরণের” আগে কোন স্পেস এবং সময়ই ছিল না তখন সেখানে প্রশ্ন করাটা একদম বোকামি যে, ঐ “পয়েন্ট অব সিঙ্গুলারেটি” প্রথমে কোথায় ছিল এবং তা কখন বা কতদিন আগে বিস্ফোরণ হয়েছিল বা কোন সময় বিস্ফোরণ হয়েছিল। যখন সময়েরই জন্মই হয়নি এবং স্পেস বা স্থানের জন্ময় হয়নি তখন এই প্রশ্নটা ঠিকই আসলেই বোকামি।

কিন্ত ইশ্বর তার জন্ম, তার আকার, তার বিশালতা, তার শক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের মাধ্যমে আসলে আমাদের কিভাবে দেখিয়েছে? সেই সাথে এপর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সব থেকে স্বাধীন চিন্তার জীব মানুষের কাছে আসলে তার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যপারটাই বা কেমন?

– ডিম ভেঙে পড়ে আছে?
– উপর থেকে একটা ডিম পড়ে ভেঙে আছে?
– কি কারণে বা কে যেন ডিম উপর থেকে ফেলে দেবার কারণে নীচে পড়ে ভেঙে পড়ে আছে?

তিনটি সত্য, তিনটি দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই খুঁজে নিতে হবে আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, এবং সেই অনুযায়ী তার প্রতি আমাদের বিশ্বাস। এই তিনটি উত্তরেই লুকিয়ে আছে নাস্তকতা, সাধারণ ঈশ্বর বিশ্বাসী এবং সম্পূর্ণ রূপে যারা সব কিছুতেই ঈশ্বর দেখতে পান…
কিন্ত কেন এবং কিভাবে…….

চলবে…..

দ্রঃ আগের পর্বে অনেকেই অনুরোধ করেছেন ছোট ছোট করে দিতে। আর হ্যা, এখানে সেই সমস্ত মহান বিজ্ঞানীদের প্রতি আমি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ভক্তি এবং ঋণ স্বীকার করছি, যারা আমাদের এই চিন্তা, চেতনা এবং জ্ঞান সহ জানার বিষয়টিকে এত এত সমৃদ্ধ করেছে। কারণ এখানে তাদের’ই গবেষণার ফলাফল গুলো আমার আলোচনায় বারবার আসছে।

Powered by themekiller.com