Breaking News
Home / Breaking News / মতলব সেতু নভেম্বর মাসেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ডিসেম্বর মাসে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

মতলব সেতু নভেম্বর মাসেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ডিসেম্বর মাসে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

এইচ এম ফারুক, মতলব উওর প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিনে উপজেলার সেতু বন্ধন স্বপ্নের ধনাগোদা নদীর ওপর নির্মিত মতলব সেতুর কাজ শেষ। এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হলেই যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে মতলব সেতু।

এ বছরই নভেম্বর মাসে সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ডিসেম্বর মাসে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। মতলব উত্তর ও দক্ষিণ তথা চাঁদপুরের সাথে ঢাকার দূরত্ব কমানো,সময় বাচাঁতে এবং মতলববাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মতলব বাজার সংলগ্ন পূর্ব দিকে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর মতলব সেতু নির্মাণের একটি বড় রকমের প্রকল্প হাতে নেয় চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর ভিত্তি প্রস্তুরের ফলক উম্মোচন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল এমপি । ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয় মতলব সেতুর। ২০১৭ সালের ৩০ জুন সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেতুর অবকাঠামোর পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২ বার মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কাজের সমাপ্তি তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে নবেম্বর মাসের মধ্যে তারা সড়ক ও জনপদ বিভাগকে সেতুটি বুঝিয়ে দিতে পারবে।
সেতুটির প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হয়েছে ৩ শ’৪ দশমিক ৫১ মিটার আরসিসি দৈর্ঘের সেতু ,অ্যাপ্রোচ সড়কের ওপর ২৫.৭৫ মিটার একটি সেতু, ১২ মিটার দু’টি আরসিসি কালভার্ট, ১০ মিটার দু’টি আরসিসি আন্ডারপাশ, ১.৮৬ কি.মি.সার্ফেসিং এবং নতুন পেভমেন্ট তৈরি, ৯ দশমিক ৩৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৩.২৩ লাখ ঘনমিটার সড়ক বাঁধ, জিও টেক্সাইল, টো-ওয়াল, সার্ফেস ড্রেন, দু’টি ইন্টারসেকশন আইল্যান্ড এবং সাইন, সিগন্যাল ইউটিলিটি সিফটিংসহ আনুসাঙ্গিক কাজ করার কথা রয়েছে। ১০. ২৫ মিটার প্রস্থের সেতুতে ৭টি স্প্যান থাকবে। সেতুর দু’পাশে অ্যাপ্রোচ সড়কটি থাকবে ১.৮৬ কি.মি।
সম্প্রতি এ প্রকল্পের আওতায় রিটানিং ওয়াল ও সিসি ব্লক বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। রানা বিল্ডার্স(প্রা.)লি. মতলব সেতুর নির্মান কাজ করছে।
রানা বিল্ডার্স(প্রা.)লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানাজার প্রকৌশলী জ্যোতিরাম মল্লিক শিবু জানান, মূল সেতুর কাজ শেষ। এ্যাপ্রোচ সড়কের কার্পেটিং সহ সকল কাজ এ মাসেই শেষ হবে। নভেম্বর মাসে আমরা সেতুটি কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারবো।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জসিম জানান, এ্যাপ্রোচ সড়কের কিছু কাজ ও রং করা ছাড়া সেতুর বাকী সম্পূর্ণ। নভেম্বর মাসেই আমরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেতুটি বুঝে নিতে পারবো। চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন,‘ মতলব সেতুর কাজ শেষ করার মেয়াদ শেষ হবে ডিসেম্বরে। কিছু কাজ বাকী থাকলেও নভেম্ব মাসে সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
আশা করছি ডিসেম্বর মাসে যানবাহর চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিতে পারবো। সুবিধাভোগী ছেংগারচর বাজারের মোল্লা লাইব্রীর ম্যনেজার আবু ইউসুব জানান, সেতুটি নির্মাণের ফলে সেতুর দক্ষিণ এলাকার মানুষ সময় কমিয়ে ঢাকা এবং উত্তর এলাকার মানুষ জেলাসদরসহ দক্ষিণ আসা-যাওয়া করতে পারবে। পন্য পরিবহনে খরচ কমবে। গাড়ি চালক সোহাগ মিয়া জানান, সেতুটি চালু হলে আমরা দ্রুত মালামাল পৌঁছাতে পারবো ও গাড়ি ভাড়াও কমে আসবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ বলেন,মতলব উত্তর গও মতলব দক্ষিন উপজেলার দীর্ঘ দিনের দাবি এ মতলব সেতু। আওয়ামীলীগ সরকার দেশের উন্নয় ধারাবাহকিতায় মতলব সেতু বাস্তবায়ন করেছেন।
সেতুটি চালু হলে মতলববাসীর দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্নপূরণ হবে। ঢাকা যাতায়তে সময় ও দূরত্ব কমে যাবে। মতলব উত্তর ও দক্ষিণের সাথে সেতুবন্ধন,মৎস্য,খাদ্যশষ্য,অন্যান্য কৃষিপণ্য ও উৎপন্ন মালামাল পরিবহনে সহজতর ও সাশ্রয় হবে। জেলা সদর চাঁদপুরসহ নোয়াখালী,ফেণী, লক্ষ্মীপুর প্রভৃতি জেলার সাথে যোগাযোগ মাধ্যম সৃষ্টি হবে। প্রবাসীদের যাতায়তের সুবিধা ও ব্যবসা, বাণিজ্যের নতুন নতুন মাত্রা যোগ হবে। চাঁদপুর, হাইমচর, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, রামগঞ্জ, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, হাজীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষজনকে কুমিল্লা হয়ে দীর্ঘ পথ না ঘুরে এ পথে সহজেই স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় আসা-যাওয়া সম্ভব হবে।

Powered by themekiller.com