Breaking News
Home / Breaking News / একজন সফল মোশারফ হোসেনের জীবনের গল্প

একজন সফল মোশারফ হোসেনের জীবনের গল্প

মোঃ রুহুল আমিন : সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে হয়েছেন সফল পাশাপাশি সমাজকেও করেছেন আলোকিত! এমন সফল ব্যক্তিদের একজনের সাথে আজ আমরা পরিচিত হবো।

মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে। তিনি চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার খামপাড় গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম গ্রহন করেন। পিতা মরহুম মোহাম্মদ অলি উল্যা ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন খনিজ ও কয়লা অধিদপ্তরের সিনিয়র পরিদর্শক। তিনি গত হয়েছেন এবছরের ১২ মে। মা মিসেস আনোয়ারা বেগম গৃহিনী। তাদের ৪ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন পঞ্চম। ভাই-বোন সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া-লেখা শেষ করে আজ স্ব-স্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত।

মোশারফ হোসেনের মাতা আনোয়ারা বেগম একজন রত্নগর্ভা মা। আমরা সেই মাকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।

ছোটবেলা থেকে মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ছিলেন চঞ্চল এবং লেখা-পড়ায় ছিলেন মেধাবী এবং মনোযোগি। চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নস্থ বিজয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি উত্তীর্ণ হবার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চাঁদপুর সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন তিনি। এই কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে ২০০০ সালে অনার্স সম্পন্ন করেন। অনার্স ডিগ্রী শেষে তিনি চাকুরি পাওয়ার আশায় চলে আসেন রাজধানী ঢাকায়।অনেক ঘুরাঘুরি শেষে কারো কোন সহযোগিতা না পেয়ে পরবর্তীতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিজ চেষ্টায় শাহ সিমেন্টে একাউন্টস অফিসার পদে যোগদান করেন।

এদিকে লেখা-পড়া শেষ করার তাগিদ ছিল তার, তাইতো দিনে চাকরি আর রাত্রে অধ্যয়ন করার জন্য নৈশকালীন মাস্টার্সে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। চাকরির পাশাপাশি নৈশকালীন অধ্যয়ন করা অনেক কষ্টের হলেও সাধনা ছিল বলেই তিনি ২০০১ সালে কৃতিত্বের সাথে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। লেখা-পড়ার পাশাপাশি তিনি লেখালেখি ও করতেন। সেসময়ে তার লেখা একটি উপন্যাস প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। আগামি বই মেলায় তা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।

ঢাকা জীবনের শুরুতে তিনি শাহ সিমেন্টে একাউন্টস অফিসার পদে যোগদান করে স্বল্প সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নজর কাড়তে সক্ষম হন। এই প্রতিষ্ঠানে সাড়ে তিন বছর কাজ করা কালে পাটওয়ারী গ্রুপে একাউন্টস ম্যানেজার হিসাবে যোগদান করেন তিনি।পাটওয়ারী গ্রুপে সফলভাবে সাড়ে তিন বছর কাজ করা কালীন সময়ে তিনি ১০০% রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আনন্দ গ্রুপে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক(একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স) হিসাবে যোগদান করেন। চাকুরিতে প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে দক্ষতা ও যোগতার প্রমান দেয়ায় তিনি দেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ পেতে থাকেন। অতঃপর তিনি দুই বছর দুই মাসের মাথায় ২০১১ সালের ১ মার্চ তারিখে ১০০% রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মিশোয়ার গ্রুপের সিএফও(চীফ ফিন্যান্স অফিসার)পদে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি মিশোয়ার গ্রুপের কর্ণধারদের আস্থাবাজন হিসাবে অত্যন্ত দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমান দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানে একজন গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি হিসাবে কাজ করছেন। মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন এখন সফলতার মধ্য গগনে আছেন।

ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য, ইতালী, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত ও থাইল্যান্ড ভ্রমন করেছেন।

মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন একজন সফল উদ্যোক্তাও বটে। ইতিমধ্যে তিনি জনসাধারনকে স্বল্প মূল্যে স্বাস্থসেবা প্রদানের উদ্যোশে কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে ঢাকার মিটফোর্ডে ‘মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটাল লিমিটেড’ নামের একটি হাসপাতাল স্থাপন করেছেন, তাছাড়া মান সন্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকার শনির আকড়ায় শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন এমন কয়েকজন শিক্ষা সারথীসহ ‘ওয়াল্ড ব্রিজ স্কুল এন্ড কলেজ’ নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। তিনি উক্ত দুইটি প্রতিষ্ঠানের একজন উদ্যোক্তা পরিচালকও বটে।

মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন একজন সফল সমাজসেবকও বটে। তাঁর প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বহু শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়ের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। আরো চাকরির সুযোগ করে দেয়ার জন্য তিনি দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি চাঁদপুর ফ্রেন্ডস নামে একটি সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তার একক প্রচেষ্টায় এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই সংস্থার মাধ্যমে চাঁদপুর জেলার যে সকল মানুষ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন ঐ সকল মানুষদেরকে সংম্বর্ধনা দিয়ে আসছে। এলাকার যে কোন সামাজিক উদ্যোগে ‘চাঁদপুর ফ্রেন্ডস’ জনসেবায় এগিয়ে আসছে।

নিজ এলাকার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ সমজিদ, মাদ্রাসার উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে চলেছেন। সৃষ্টিকূলের সকলের প্রতি রয়েছে তার অগাধ ভালোবাসা। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে তিনি আপনের আপন করে নেন খুব সহজে।

ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সুখি মানুষ তিনি। তিনি দুই ছেলের জনক। তাঁর স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীধারী একজন সুশিক্ষিত মানুষ। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি অত্যন্ত সুখি জীবন-যাপন করছেন।

বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে তিনি সবসময়ই প্রথম সারিতে থাকার চেষ্টা করেন। তিনি অন্যের সন্তানকে নিজের ভাই বা সন্তানেরমত ভালোবাসেন। শতশত দরিদ্র মেধাবী তরুনদের ভালোবেসে সামনে এগিয়ে যাবার পথ তৈরি করে দেয়ার জন্য রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এলাকার তরুনেরা তাঁকে তাদের আইকন হিসাবে মনে করে। তাঁর হাতে তৈরি অনেকে আজ নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজে আলো ছড়াচ্ছে। এলাকার মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধার সাথে মনে করেন। তাঁকে সবাই সাদা মনের মানুষ হিসাবে জানেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আলো ছড়ানো এই মানুষটি বেঁচে থাকুক, এমন মানুষদের হাত ধরে দেশ ও সমাজ সামনে এগিয়ে যাক, দেশ আলোকিত হউক এমন প্রত্যাশাই করি। ইলিশের বাড়ী চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় আগমন ঘটেছে অনেক অলি আল্লাহ গাউছ কুতুবদের। যাঁদের স্মৃতি চিহ্ন রয়েছে চারিদিকে। এই এলাকারই সূর্য সন্তান চাঁদপুর জেলার চাঁদমুখ মোশারফ হোসেন। সমাজসেবায় নিবেদিত প্রাণ। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রেরণা তিনি।

সদা হাস্যজ্বল এই আলোকিত মানুষটি বেচেঁ থাকুক অনন্তকাল সকলের হৃদয়ে।

Powered by themekiller.com