Breaking News
Home / Breaking News / শিক্ষার্থীদের ফেসবুক আসক্তি থেকে দূরে রাখার সহজ উপায়

শিক্ষার্থীদের ফেসবুক আসক্তি থেকে দূরে রাখার সহজ উপায়

লেখক : মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান

মোবাইল ফোনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সহজে মতামত আদান-প্রদান করা যায়। এটি মানুষকে খুব কাছে নিয়ে এসেছে। শুধু সমস্যা হয়েছে এগুলো অধিক, অপ্রয়োজনীয় এবং আসক্তি। শিক্ষার্থীরা রাত জেগে এর অপব্যবহার করছে। এতে লেখাপড়ার ক্ষতির পাশাপাশি কোমলমতী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

যত্রতত্র মোবাইল ফোনের ছড়াছড়ি। ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগই স্বল্পবয়সী, আরো স্পষ্ট করে বললে শিশু- স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী। আনাচেকানাচে যত্রতত্র মোবাইল ফোন চোখে পড়ে। দৃষ্টিতে আসে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে ফেসবুক ব্যবহারের আধিক্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ হয়ে ফেসবুকে মগ্ন থাকতে দেখা যয় তাদের। এতে লেখাপড়ার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন অভিভাবক, শিক্ষক ও অভিজ্ঞ মহল।

সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম সহজ মাধ্যম ফেসবুক। এটির ভালো-খারাপ দুটি দিকই আছে। বেশি আসক্তি সময় নষ্ট, অর্থ ব্যয়, অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে চোখ এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, কাজের ক্ষতি, পড়ালেখার ক্ষতিসহ স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াসহ ইত্যাদি ক্ষতি হয়। অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের ক্ষতি হয়, মাথা ব্যথা করে, চোখে ব্যথা করে। মূল্যবান সময়ের ক্ষতি হয়। ফেসবুকের অশ্লীল পোস্ট দেখার ফলে মানসিক ক্ষতিও হয়। এতে তাদের নৈতিক মূল্যবোধ লোপ পায়। শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আসলেই আধুনিকতার ছোঁয়ায়, আরো সহজ করে বললে ফেসবুক বর্তমান প্রজন্মের হাতে হাতে। এতে আসক্ত হয়ে পড়ায় কোমলমতী শিশুদের লেখাপড়া লাটে উঠার উপক্রম। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন শোভা পাচ্ছে। এরা অহরহ ফেসবুকে চোখ রাখছে। লেখাপড়া-নাওয়া-খাওয়া ভুলে তারা ফেসবুকে মজে থাকছে। এতে শিক্ষার্থীদের মূল লক্ষ ছাত্র নং অধ্যয়নঃ তপোঃর বারোটা বাজছে।

মোবাইল ফোন ও ফেফবুকের ক্ষতিকর দিকগুলো জানা সত্ত্বেও এ থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না শিশু ও শিক্ষার্থীদের। মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের স্কিন থেকে তাদের চোখ যেন সরছেই না। রাত জেগে লেখাপড়া না করে ফেসবুকে ডুবে থাকছে। এটা অনেকের জন্য রোগে পরিণত হওয়ার উপক্রম। ফেসবুকের এমন আসক্তি কোমলমতী শিশুদের যারপরনাই ক্ষতি করছে। সচেতন অভিভাবকরা এমন শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। শিশুদের জন্য কাজ করে- এমন শিশু সংগঠনগুলোও এ নিয়ে চিন্তিত।

মোবাইল ফোন ও ফেফবুকের এমন সর্বনাশা আসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক থেকে শুরু করে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি। অন্যথায় জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধাররা শিক্ষার আলোয় আলোকিত না হয়ে বিপথে পরিচালিত হবে। এ থেকে বের করে আনার জন্য তাদের দেশীয় খেলাধুলার চর্চা বাড়িয়ে দিতে হবে। এতে শরীর-মন দুটিই ভালো থাকবে।

লেখাপড়ার বন্ধ রেখে ফেসবুক অধিক ব্যবহারে অর্থ খরচ, মানসিক যন্ত্রণা, মাথাব্যথা ও চোখের ক্ষতি করছে। তাই ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় শিশুদের ফেসবুক থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক নির্দেশনা দেওয়া জরুরি। এ জন্য দেশীয় খেলা ফুটবল, কাবাডি, হা ডু ডু, গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবান্ধা, বৌচি, কানামাছি, খো-খো, ডাংগুলি, হাড়িভাঙা, দড়ির লাফ, দড়ি টানাটানি, চেয়ার সিটিং, রুমাল চুরি, নৌকাবাইচ, ঘোড় দৌড়, কপাল টোকা, বউরানী, ছক্কা, লাঠিখেলা, বলীখেলা, এক্কাদোক্কা, চোর-ডাকাত, মার্বেল, ষোলগুটি, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই খেলাগুলোয় অধিক মন দিতে পারি।

প্রামীণ এসব খেলায় শিক্ষার্থীদের মনযোগী করতে স্থানীয় খেলার মাঠগুলো সচল করতে হবে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্রদের এ খেলাগুলোর প্রতি আকৃষ্ট করতে এগুলো শেখাতে হবে। হারিয়ে যাওয়া একসময়ের এসব জনপ্রিয় গ্রামীণ খেলার আনন্দ উপভোগ করতে পারলে তারা এতে মনোনিবেশ করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্ণধারসহ অভিভাবকরা এসব খেলার প্রতি শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে সক্ষম হলে সহজেই মোবাইল ফোন এবং ফেসবুকের আসক্তি থেকে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও দূরে রাখা যাবে।

সংগ্রহ — এইচ এম ফারুক

Powered by themekiller.com