শাহরিয়ার খানঃ
চাঁদপুরে চট্র্রগ্রাম লৌহ বিতান কর্তৃক বাংলাদেশ রেলওয়ের ৯টি রেলবিট অবৈধভাবে চুরি করে বিক্রিকালে জনতা হাতেনাতে আটক করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জব্দ করেছে। এ ২৩ ফুট লম্বা ৯টি রেলবিট বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান শহরের ৫নং ঘাটস্থ চট্রগ্রাম লৌহ বিতান এর মালিক মৃদুল কান্তি দাস ও রতন কান্তি দাস ভুয়া রিসিট দেখিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়ার পায়তারায় লীপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উদ্ধারকৃত রেলবিট এর মধ্যে ২টি লৌহ বিতান ও ৭টি নতুন বাজার স’মিলস্ এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় রেলওয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বুধবার(১৫ সেপ্টম্বর) রাত ৯টায় চাঁদপুর এল-সি/৯ এর মেইট মোনমহন চন্দ্র বাদী হয়ে রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। রেলওয়ে পুলিশ শহরের নতুন বাজার এলাকার মো: শাহজাহান বেপারীর নবনির্মিত একটি স-মেইল থেকে ৭টি বীট জব্দ করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মুরাদ উল্যাহ্ বাহারের নেতুত্বে পুলিশফোর্স বুধবার অভিযান চালিয়ে রেলবিট বিক্রিকারী ব্যক্তি শ্রী মুদুল কান্তি দাসকে আটক করে ।
বৃহস্পতিবার রেলওয়ে থানায় দায়েরকৃত মামলায় ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাস
কে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
চাঁদপুর –লাকসাম রেলপথের দায়িত্বরত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী মজুমদার বুধবার চাঁদপুর এসে তদন্ত পূর্বক জানান,জব্দকৃত রেলবীট রেলওয়ের নিজস্ব সম্পদ।
এই ঘটনা অনুসন্ধান করে স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, চাঁদপুর রেলওয়ে ৫নং ঘাট ও রেলওয়ের ইয়ার্ডের ভিতরে শুধু মাত্র ৭পিচ রেলবীট নয়, রেললাইনের পাশে গুডস্ অফিসের নিকটে বিগত দিনে প্রায় ৫০পিচেরও বেশী রেললাইন মজুতছিল।
সেখান থেকে স্থানীয় রেলওয়ের লাইনে কাজে নিয়োজিত আসাধু ব্যাক্তিরা বিভিন্ন সময়ে ব্যানগাড়ী যোগে এখান থেকে এসব রেললাইন (রেলওয়ে বীট) অন্যত্র ব্যবহার করার নাম করে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ৫নং ঘাটের ব্যবসায়ীদের ভুল বুঝিয়ে এ গুলো নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে, বলে ৫নং ঘাট এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান। এছাড়াও নতুন করে ৭পিচ রেললাইন বিক্রি করার ঘটনা ফাসঁ হওয়ার পর তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছে।
এলাকাবাসী জানান, এখানে মানুষের বিচরণ কমার পরে মঙ্গলবার শেষ বিকেলে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজশে অবৈধভাবে চুরি করে তারা এ রেললাইন গুলো এখান থেকে নতুন বাজার এলাকার পানামা ডগ ইয়ার্ডে পাশে অবস্থিত একটি স-মিলে পাচার করে বিক্রি করছিল। শহরের ৫নং ঘাটের এ রেললাইন বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানের মালিক চট্রগ্রামস্থ বিএসআরএম স্টীলমিলের ২০১৫ সালে ক্রয় করা পেইডে জনৈক ফারুক এন্টারপ্রাইজের নামে দুই হাজার কেজি রেললাইন বিক্রির একটি ভুয়া রিসিট প্রদর্শন করে। যার কোন ভিত্তি নেই। মৃধুল কান্তি দাস জানু স্টীল ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদপুরস্থ চট্টগ্রাম লৌহ বিতানের নামে ৫৫৬৬ কেজি রেল লাইন ক্রয়ের একটি রিসিট দেখিয়ে রেললাইন গুলো বৈধ বলে দাবী করেছে।
এ ছাড়া রেলওয়ে চট্রগ্রাম বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ জানান, রেলওয়ে যে অব্যবহৃত লাইন বিক্রি করবে, সে লাইন টেন্ডারের মাধ্যম ক্রয় করার তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে গালিয়ে রড বা অন্য কিছু প্রস্তুত করতে হবে। নতুবা সে মাল রেলওয়ে ইচ্ছে করলে পুনরায় জব্দ করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবে। রেলওয়ে থেকে ক্রয়কারী অব্যবহৃত রেললাইন খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবেনা।
চট্টগ্রাম লৌহ বিতানের মালিক মৃদুল চন্দ্র দাস ঘটনার সম্পর্কে বলেন, সে চট্রগ্রাম থেকে বৈধভাবে এ লাইন ক্রয় করেছে এবং সে রেললাইনগুলো শহরেরর নতুন বাজার পানামা ডগইয়ার্ডের পাশে নতুন আরেকটি ডগইয়ার্ড গড়ে উঠেছে। সেখানে ৭পিচ রেললাইন বিক্রি করেছি। আমার কাছে রিসিট আছে।
চাঁদপুরস্থ গ্যাংয়ের এলসি-৯এর মেইট মোনমহন চন্দ্র এ বিষয়ে জানান, এ রেললাইন গুলো দীর্ঘ বহু বছর যাবৎ এখানে পড়ে ছিল। সেখান থেকে মৃদুল বাবু রেললাইন চুরি করে বিক্রি করেছে। আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি রেললাইন উদ্ধারের জন্য মামলা দিয়েছি রেলওয়ে থানায়।