অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের পেছনে আমার দেশের কিছু লোক জড়িত। পদ্মা সেতু নির্মাণে যেসব দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
সোমবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর নামফলক উন্মোচন এবং পদ্মা সেতুর রেল সংযোগের নির্মাণকাজসহ বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে আমরা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত সরকার এসে তার আর কোন অগ্রগতি করেনি। আমরা আবার ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতুর কাজে হাত দেই। কিন্তু নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়া হয়। ড. ইউনুসের প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, অর্থায়ন বন্ধের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। আমার পরিবারের লোকজনকেও এতে জড়ানো হয়। আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি, বলেছি দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের সব অভিযোগ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেই। সেভাবেই কাজ চলছে,পদ্মা সেতুর ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা নতুন পরিকল্পনা করে পদ্মা সেতুর পাশে রেল সেতু করতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সকল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের পেছনে আমার দেশের কিছু লোক জড়িত ছিল। আমি শুধু বলতে চাই, যারা গরীবের টাকা মেরে খায় তাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই, তারা দেশের মানুষকে ভালোবাসতে পারে না।
ওই সুধী সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী জাজিরা পয়েন্টে সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিবচরে যাবেন এবং ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কাঠালবাড়ি ফেরিঘাটে জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন।
সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকার নিজস্ব তহবিলে দেশের সর্ববৃহৎ ‘পদ্মাসেতু’ নির্মাণ করছে। মূল সেতু, নদী শাসন, দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণসহ ৫ ভাগে সম্পন্ন হচ্ছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ।
এই সেতুতে থাকবে মোট ৪২টি পিলার। এগুলোর প্রতিটি ৬ টি পাইলের ওপর দণ্ডায়মান থাকবে। পিলারগুলোর ওপরে বসানো হবে ইস্পাতের স্প্যান। সেতুতে মোট ৪১ টি স্প্যান বসবে।
মূল সেতু নির্মাণ করছে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। নদী শাসন কাজে নিয়োগ করা হয়েছে চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনকে এবং দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লি.। এই সেতুর নির্মাণ কাজ তদারক করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট ও কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন অ্যান্ড এসোসিয়েটস। এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।