Breaking News
Home / Breaking News / নির্বাচনের যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে: হাসিনা

নির্বাচনের যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে: হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন করার জন্য ‘যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে’ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও সেটাই থাকবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার আগে শনিবার ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ভয়েস অব আমেরিকা জানতে চেয়েছিল শেখ হাসিনা নিজে যদি এখন বিরোধী দলে থাকতেন, আজকের বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি তিনি কীভাবে দেখতেন। নির্বাচন কমিশনকে কেমন ধারার মনে হত। লেভেল প্লেইং ফিল্ড আছে বলে তার মনে হত কি না।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগের সরকারগুলো নিজেদের ইচ্ছেমত নির্বাচন কমিশন করত। আর তার সময়ে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে ‘এই স্বচ্ছতা’ আনতে পেরেছে।

গত দশ বছরে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নির্বাচন হয়েছে এবং সেখানে মানুষ উৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আপনি যদি যাচাই বাছাই করেন, অবশ্যই আপনাকে স্বীকার করতে হবে, অবশ্যই বর্তমানে ইলেকশন করবার মত সুন্দর একটা পরিবেশ আছে এবং নির্বাচন কমিশন সে নির্বাচন করতে পারবে।”

‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে সাম্প্রতিক নির্বাচনের উদাহরণ টানেন শেখ হাসিনা।

এর মধ্যে দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হলেও সিলেটে বিএনপির প্রার্থীর জয় পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আপনারা নিজেরাই দেখলেন, আমাদের প্রার্থী মাত্র আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে গেল। এত কম ভোটে যে হারল, আমরা তো কই ওই ভোট পরিবর্তন করা, বা হাত দেওয়া… আমরা তো কিছু বলিনি। আমাদের প্রার্থীও সেইভাবে নিয়েছে। এটা কি প্রমাণ করে না যে এখন ইলেকশন করার মত যথেষ্ট সুন্দর পরিবেশ আছে?”

আগামী নির্বাচনেও সেই পরিবেশ থাকবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা কথা আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে। আমার রাজনীতি কিসের জন্য, আমি কেন রাজনীতি কেন, আমি ক্ষমতায় থেকে কি কাজ করছি… আমি আমার নিজের ভাগ্য গড়ছি? আমার ছেলেমেয়ের ভাগ্য গড়ছি? আমি দেশের মানুষ ভাগ্য গড়ছি।”

সামরিক সরকারের সময় দেশে নির্বাচনকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে- সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে বেসরকারি খাত একা কিছু করতে পারে না। বেসরকারি খাতের কাজ করার সুযোগ সরকারকেই করে দিতে হয়। তার সরকার সেটাই করে দিয়েছে।

গত দশ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের পরও যারা ‘উন্নয়ন হয়নি’ বলে অভিযোগ করে, তাদের সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “চোখ থাকলেও যদি অন্ধ হয়, তাকে কি আপনি কিছু দেখাতে পারবেন? আমার মনে হয় না।”

দেশের সাধারণ মানুষ ওরকম ভাবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা কিন্তু খুশি।”

দেশে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “যখন একটা গ্রামের মেয়ে আমাকে বলে, আপা আমি এখন রাইস কুকারে ভাত রাঁধি, এই যে একটা পরিবর্তন… গ্রামে যাতে নাগরিক সুবিধা পৌঁছে যায়, আমি সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

ভারতের আসামে সংশোধিত নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখের বেশি মানুষকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা তাদের বের করে দেওয়ার যে হুমকি দিচ্ছেন- তা নিয়ে ‘বিচলিত’ কি না- তা শেখ হাসিনার কাছে জানতে চেয়েছিল ভয়েস অব আমেরিকা।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা হয়ত ওদের নিজস্ব পলিটিক্স। আমি তো মনে করি না যে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী, যথেষ্ট মজবুত, সেখানে কেন গিয়ে অবৈধ হবে?”

তিনি বলেন, “এখন তাদেরই নাগরিক, তারা যদি কাউকে অবৈধ বলে আর বৈধ বলে, এটা তাদের ব্যাপার।”

এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি কিছুটা কথা বলেছি, প্রাইম মিনিস্টারের সাথে আমার কথা হয়েছে। বলেছে যে না, তাদেরকে ফেরত পাঠানো বা এ ধরনের কোনো চিন্তা তাদের নেই।”

রোহিঙ্গা সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি কাদের সহযোগিতা পেয়েছেন- এই প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।

“অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে কক্সবাজারের মানুষগুলি। কারণ তাদের জমি…। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিটি সংস্থা।… সারা বিশ্বই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে ।”

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করতে কাজ করছে।

“আমরা চাচ্ছি যে প্রথমে আমরা কিছু পাঠাব, তাদের সাথে ওরা কি রকম ব্যবহার করে এটা দেখব, ইতোমধ্যে আমরা ভাসান চরে তাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি, তারা থাকতে পারবে।”

Powered by themekiller.com