Breaking News
Home / Breaking News / কচুরিপানা পরিষ্কার করা এক ইউএনও’র গল্প

কচুরিপানা পরিষ্কার করা এক ইউএনও’র গল্প

অনলাইন ডেস্ক :ছুটির দিনের সকাল। চারিদিকে শত শত উৎসুক মুখ। বিস্ময় ভরা দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি গিয়ে আটকেছে এক তরুণের উপর। যিনি বিলের পানিতে নেমে কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন।

নিজেকে সাধারণের পর্যায়ে নামিয়ে আনা অসাধারণ এই মানুষটি আসলে একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। গত শুক্রবার এমন অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেন দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বে থাকা মো: মশিউর রহমান।

দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা নবাবগঞ্জের আশুরার বিলের কচুরিপানা সাড়ে তিন ঘণ্টা সাঁতরে পরিষ্কার করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার আগে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করেন ঐতিহ্যবাহী বিলটি।

ইউএনও’র এ ধরনের উদ্যোগের কারণ কি? কেনই বা তিনি নিজে পানিতে নেমে বিলটি পরিষ্কার করলেন? এসব নিয়ে সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন মশিউর রহমান।

রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার পদ্মার পাড়ে জন্ম ইউএনও মশিউর রহমানের। ৩০তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পান প্রশাসন ক্যাডারে। এরপর ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর যোগ দেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে। এরপর থেকেই সেই উপজেলার উন্নয়নে করে চলেছেন একের পর এক কাজ।

নবাবগঞ্জের প্রায় প্রতিটি রাস্তাকে তিনি উদ্ধার করেছেন অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে। আগে যে রাস্তায় পাশাপাশি দুটো রিকশা চলতে কষ্ট হত, এখন সেখানে অবাধে যাওয়া আসা করতে পারে বড় বড় গাড়ি।

প্রচ্ছদবাংলাদেশ
কচুরিপানা পরিষ্কার করা এক ইউএনও’র গল্প
বাংলাদেশ
– আফরিন আপ্পি ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২০:০৬

ছুটির দিনের সকাল। চারিদিকে শত শত উৎসুক মুখ। বিস্ময় ভরা দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি গিয়ে আটকেছে এক তরুণের উপর। যিনি বিলের পানিতে নেমে কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন।

নিজেকে সাধারণের পর্যায়ে নামিয়ে আনা অসাধারণ এই মানুষটি আসলে একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। গত শুক্রবার এমন অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেন দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বে থাকা মো: মশিউর রহমান।

দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা নবাবগঞ্জের আশুরার বিলের কচুরিপানা সাড়ে তিন ঘণ্টা সাঁতরে পরিষ্কার করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার আগে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করেন ঐতিহ্যবাহী বিলটি।

ইউএনও’র এ ধরনের উদ্যোগের কারণ কি? কেনই বা তিনি নিজে পানিতে নেমে বিলটি পরিষ্কার করলেন? এসব নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন মশিউর রহমান।

রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার পদ্মার পাড়ে জন্ম ইউএনও মশিউর রহমানের। ৩০তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পান প্রশাসন ক্যাডারে। এরপর ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর যোগ দেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে। এরপর থেকেই সেই উপজেলার উন্নয়নে করে চলেছেন একের পর এক কাজ।

নবাবগঞ্জের প্রায় প্রতিটি রাস্তাকে তিনি উদ্ধার করেছেন অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে। আগে যে রাস্তায় পাশাপাশি দুটো রিকশা চলতে কষ্ট হত, এখন সেখানে অবাধে যাওয়া আসা করতে পারে বড় বড় গাড়ি।

এরপর তার দৃষ্টি যায় প্রায় দখল হতে থাকা আশুরার এ বিলটির দিকে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে নেমে পড়েন বিল উদ্ধারে। যেই কথা সেই কাজ। গত এক মাস যাবৎ বিলটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন ইউএনও।

গত শুক্রবার ছিল তার এ কাজের শেষ দিন। আর সেদিনটিতেই তিনি বিল উদ্ধারে নেমে পড়েন পানিতে।পদ্মার পাড়ে জন্ম হওয়ায় নদীর প্রতি আবেগটা যেনো একটু অন্যরকম। আর তাই পানিতে নামতে তার দ্বিধা হয়নি একটুও।

খোদ ইউএনওকে বিলে নামতে দেখে বসে থাকতে পারেননি স্থানীয় জনসাধারণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বন কর্মকর্তা এমনকি সাংবাদিকরাও। তারাও ইউএনওর সাথে অংশ নেন এ অভিযানে।

লাল শাপলা, পদ্ম ফোটা বিলটি অবৈধ দখলদালদের কবলে পড়ে প্রায় হারাতে বসেছিলো তার ঐতিহ্য। হরেক প্রজাতির মাছ পাওয়া বিলটিতে প্রভাবশালীরা নিজেরাই বাঁধ দিয়ে মাছ ধরতো। সাধারণ জনগণের সেখানে প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু এখন সেই বিলটি উন্মুক্ত হয়েছে সবার জন্য। সরু হতে থাকা বিলটি যেনো নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে। ৩৬০ হেক্টর এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই আশুরার বিলটিতে মেলে বিলুপ্তপ্রায় অন্তত আট প্রজাতির মাছ।

নিজে পানিতে নেমে বিল পরিষ্কারের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণ কি? এ প্রশ্নের উত্তরে ইউএনও মশিউর রহমান বলেন: ‘প্রথমত ইউএনও হিসেবে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমি এখানে যোগ দেয়ার পর থেকে এই বিলটি সম্পর্কে, এর ঐতিহ্য সম্পর্কে শুনেছি। আমি লোকমুখে শুনেই কল্পনা করতে পারতাম বিলটি আসলে কতটা সুন্দর ছিল। এর পাশেই রয়েছে একটা শালবন। যা বিলটির পরিপূরক। বন আর বিলের যে পরিবেশ তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। কালের পরিক্রমায় বিল ভরাট হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি বিলটিকে তার আগের রূপে ফিরিয়ে নিতে।’

Powered by themekiller.com