Breaking News
Home / Breaking News / পদ্মা-মেঘনায় দুই মাস ইলিশসহ সকল মাছ শিকার নিষিদ্ধ

পদ্মা-মেঘনায় দুই মাস ইলিশসহ সকল মাছ শিকার নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের পোনা জাটকা সংরক্ষণের জন্যে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দু’ মাস ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই ২ মাস জেলা টাস্কফোর্সের তত্ত্বাবধানে ৪টি টিম রাত-দিন ২৪ ঘন্টা পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুর নৌ-সীমানায় সার্বক্ষণিক অভিযান চালিয়ে জাটকা রক্ষায় কাজ করবে বলে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। এ টিমে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর। আজ শনিবার রাত ১২টার পর থেকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৪টি টিম রাত-দিন ২৪ ঘন্টা অভিযান চালাবে। এসব টিম ২ মাস অব্যাহতভাবে জাটকা রক্ষায় নদীতে চষে বেড়াবে, যাতে অসাধু জেলেরা নদীতে জাটকা নিধন করতে না পারে। এদিকে জাটকা রক্ষায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলাধীন প্রত্যেকটি উপজেলায় জনসচেতনতার জন্যে মাইকিং, ব্যানার সাঁটানো হয়। মৎস্য আড়ৎ, মাছ ঘাট, জেলে পল্লী ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে নদীপথে প্রচার অভিযান চালিয়ে ও জনসচেনতার জন্যে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করেছে। এ সভাগুলো করা হয় মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর এলাকার চরভৈরবী পর্যন্ত। এছাড়া শুধুমাত্র চাঁদপুর সদর উপজেলায় জনসচেনতার জন্যে ৬টি উদ্বুদ্বকরণ সভা করা হয় এবং আরো উদ্বুদ্ধকরণ সভা করা হবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক মার্চ ও এপ্রিল এ ২ মাসের মধ্যে যে কোনো সময় সপ্তাহব্যাপী জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে নৌ-র‌্যালি, পথ র‌্যালি ও জনসচেতনতামূলক সভা করা হবে। এছাড়া ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিভিন্ন উপজেলায় ভিজিএফ এর চাল পেঁৗছে দেয়া হয়েছে। এতে তালিকাভুক্ত ৫১ হাজার ১শ’ ৯০ জন জেলের মাঝে বিতরণের জন্যে চাল পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সে চাল বিতরণ করা হবে। প্রত্যেক জেলে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে ভিজিএফ এর চাল পাবে।
মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার এবং চরভৈরবী থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারসহ মোট একশ’ প্রতি বছর ১ মার্চ থেকে শুরু করে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস অভয়াশ্রম এলাকা ঘোষণা করা হয়ে থাকে।
অভয়াশ্রম চলাকালীন সময়ে কোনো জেলে মাছ আহরণ, মওজুদ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। সরকার ঘোষিত এই মৎস্য আইন অমান্য করলে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
ইলিশের পোনা জাটকা এই দুই মাস বেড়ে উঠার জন্যে এবং ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার প্রতি বছর এই উদ্যোগ নিয়ে থাকে। ইতোমধ্যে দুই মাসের অভয়াশ্রম অভিযান সফল করার জন্যে চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় জাটকা রক্ষায় স্ব স্ব উপজেলায় টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পূর্বে জেলা পর্যায়েও টাস্কফোর্স কমিটির সভায় জাটকা সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব রশিদ চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, এ বছর আমরা সকল সংস্থা এক সাথে নদীতে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সদর উপজেলা এলাকার আলু বাজার ও হরিণা নৌ-পুলিশ ফাঁড়িও আমাদের সাথে কাজ করবে। জাটকা রক্ষায় দিনে ও রাতে টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় তালিকাভুক্ত ৫১ হাজার ১শ’ ৯০জন জেলে রয়েছে। এসব জেলেকে জাটকা নিধন থেকে বিরত থাকার জন্যে সচেতন করা হয়েছে এবং আরো করা হবে। নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক সভা, ব্যানার, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও মৎস্য আড়ৎগুলোর সামনে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জেলা কার্যালয় থেকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদেরকে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকলের সহযোগিতা থাকলে জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষা অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়ন হবে। তবে এ বছর বিগত বছরের তুলনায় আরো বেশী পদক্ষেপ ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আজ শনিবার রাত ১২টার পর থেকে নদীতে অভিযান চালানো শুরু হবে।

Powered by themekiller.com