Breaking News
Home / Breaking News / নায়ক রাজের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ

নায়ক রাজের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ

বিনোদন প্রতিবেদকঃ
প্রয়াত অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪২ সালে আজকের এই দিনে কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক।
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাক তাঁর অভিনয়জীবন শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ ছায়াছবির মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নায়ক হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষেক। জীবদ্দশায় ছয় শতাধিকেরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
আবদুর রাজ্জাক মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে বিয়ে করেন লক্ষ্মীকে। তাঁদের সংসারে তিন পুত্র ও এক কন্যাসন্তান। মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পুত্র বাপ্পারাজ ও সম্রাট চিত্রনায়ক।

স্কুলে পড়ার সময় বিদ্রোহ নাটক আর কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙ্গালি’ ছায়াছবিতে তাঁর প্রথম অভিনয়। ১৯৫৯ সালে বোম্বের ফিল্মালয়ে ভর্তি হন। এরপর কলকাতার ‘পঙ্কতিলক’ এবং ‘শিলালিপি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে রাজ্জাক স্ত্রী লক্ষ্মী ও পুত্র বাপ্পাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। যোগাযোগ করেন ঢাকায় প্রথম ছবি ‘মুখ ও মুখোশ’-এর পরিচালক আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে।

আবদুল জব্বার খান রাজ্জাককে ওই সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ইকবাল ফিল্মসে চাকরি দেন। চাকরিটি হচ্ছে পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারীর কাজ। সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি ‘উজালা’। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’, আখেরী টেনশন’ ও ‘ডাক বাবু’ ছবিতে তিনটি ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক। বরেণ্য চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সহকারী হিসেবেও কাজ করেন। একদিন হঠাৎ করেই সুযোগ পান নায়ক হওয়ার। জহির রায়হান রাজ্জাককে ‘বেহুলা’ ছবির নায়ক বানিয়ে দেন। ‘বেহুলা’র নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় ‘বেহুলা’।

ছবিটি সুপারহিট হলে রাজ্জাক তাঁর স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পান। ঢাকার চলচ্চিত্র পায় একজন রোমান্টিক নায়ক, যিনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের ত্রাণকর্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নায়করাজ ১৯৭৬ সালে ‘আশঙ্কা’ ছবির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন তিনি। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।

রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘অবুঝ মন’ (শাবানা), ‘চোর’ (শবনম), ‘নাচের পুতুল’ (শবনম), ‘নীল আকাশের নীচে’ (কবরী), ‘বড় ভাল লোক ছিল’, ‘বেঈমান’ (কবরী), ‘ময়নামতি’ (কবরী), ‘মনের মতো মন’ (কবরী), ‘রংবাজ’ (কবরী), ‘লাইলি মজনু’ (ববিতা), ‘সঙ্গীতা’ (কবরী), ‘জীবন থেকে নেয়া’ (কবরী)। তিনি মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, পেয়েছেন আজীবন সম্মাননাও।

দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী ও রাজ্জাক-শাবানা ও রাজ্জাক-ববিতার অনেক সিনেমা দর্শকহৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে, যা রাজ্জাককে ঢালিউডের নায়করাজ উপাধিতে ভূষিত করেছে।

২০১৭ সালের ২১ আগস্ট বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন অভিনেতা রাজ্জাক। শেষ জীবনে নানা অসুখে আক্রান্ত ছিলেন নায়করাজ। মৃত্যুর পর তাঁকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় ।

Powered by themekiller.com