মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য স্মরনে “বিজয় ফুল উৎসব”-২০১৯ এর জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান গতকাল ০৩ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসব মুখর পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতা পর্ব সকাল ১০ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে বিকেল ৩ টায় পুরস্কার বিতরণী পর্ব জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
“বিজয় ফুল উৎসব”-২০১৯ অনুষ্ঠানে জেলার আটটি উপজেলা হতে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা তিনটি গ্রুপে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিক্ষার্থীরা উপজেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
প্রতিযোগিতায় সবুজ জমিনে সাদা রঙের ম্যাটেরিয়ালে ছয়টি পাঁপড়ি ও একটি কলি সহযোগে বিজয় ফুল শাপলা তৈরি করে শিক্ষার্থীরা। ফুলের ছয়টি পাঁপড়ি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা এবং একটি কলি তার ৭ মার্চের ভাষণকে স্মরণ করাবে।
ফুল তৈরিতে ব্যবহার করা হয় কাগজ, কাপড় ও প্লাস্টিকশিট। শিশু থেকে পঞ্চম, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী-এ তিনটি গ্রুপে স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
বিজয় ফুল উৎসবে বিজয় ফুল তৈরি ছাড়াও একক ইভেন্টে গল্প রচনা, কবিতা রচনা, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাংকন ও একক অভিনয় এবং দলগত ইভেন্টে চলচ্চিত্র নির্মাণ, জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মাবোধক সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতায় আল-আমিন একাডেমির নবম শ্রেণির স্নেহা, সম্পা, তাহসিন ; একাদশের আনিকা এবং দ্বাদশের মেঘলা ও অহনা গ-গ্রুপে (নবম-দ্বাদশ) দলগতভাবে দেশাত্মবোধক সংগীত ও জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহনের জন্য নির্বাচিত হয়। উল্লেখ যে, আল-আমিন একাডেমি সম্প্রতি এমপিও প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভূক্ত হয়। এর আগে এটি আল-আমিন সোসাইটির অধীনে ছিলো।
প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় অংশগ্রহনকারীদের সাথে আসা দায়িত্বরত শিক্ষিকা ফারজানা আক্তারের সাথে, তিনি জানান প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আল-আমিন সোসাইটির অধীনে ছিলো বিধায় তাদের বহু নিয়ম-কানুন ও বাধ্যবাধকতা মানার কারনে আমাদের প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা কোনো অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহন করতে পারতো না। প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হওয়ায় এখন আর সেই বাধা নেই। এজন্যে তিনি চাঁদপুরের মাটি ও মানুষের নেত্রী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জাতীর পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি জানান আমাদের শিক্ষার্থীরা যেমন পড়াশুনায় ভালো, তেমনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ভালো পারদর্শী। তারই প্রমান দিলো এমপিওভুক্তির পরপরই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথমবারের মত অংশ নেওয়া আমাদের অংশগ্রনকারী শিক্ষার্থীরা।
বিজয়ী শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের অনেকের ভিতরেই বিভিন্ন প্রতিভা রয়েছে। এতদিন তা প্রকাশের কোন সুযোগ ছিলো না। তারা এতদিন বন্ধী খাঁচায় শিকল বাঁধা ছিলো, এখন তারা মুক্ত। তাদের ভিতর লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে তারা অভিভাবক, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।