ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ইয়াসমিন আক্তার (২৪) নামের এক কলেজছাত্রী একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়ে গত মারা গেছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে দুদিন থাকার পর গত রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি নেত্রকোনা আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অপহরণকারী আলমগীরকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ইয়াসমিন ইয়াসমিন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার খামারহাটি (কোনাপাড়া) গ্রামের খোরশেদ আলমের মেয়ে। আলমগীর নেত্রকোনা সদর উপজেলার শ্রীপুর বালী গ্রামের মৃত হাশেম উদ্দিনের ছেলে। সে ওই কলেজছাত্রীর ফুফুর দেবরের ছেলে বলে জানা গেছে।
নিহতে পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকালে ওই ছাত্রী তার বাড়ি থেকে উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে বই-খাতা কিনতে যায়। এ সময় সহপাঠী আলমগীর তাকে প্রলোভন দেখিয়ে কতিপয় সঙ্গীদের নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে তাকে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলায় আলমগীরের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।
সেখানে পানীয় দ্রব্যের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তাকে রাতভর ধর্ষণ করে আলমগীর। এক পর্যায়ে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে পরের দিন আলমগীর শ্যামগঞ্জ রেলক্রসিং এলাকায় ইয়াসমিনকে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে দুদিন আইসিইউতে থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সে মারা যায়।
ইয়াসমিনের মামা আবুল কালাম আজাদ জানান, ইয়াসমিন তার পরিবারে বড় সন্তান ছিল। তার বাবা কৃষক ও পারিবারিকভাবে সচ্ছল না হলেও মেয়ের পড়াশুনার আগ্রহী ছিল বলে তাকে কলেজে ভর্তি করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছিলেন। তার পিতা বেশ কিছুদিন পায়ে আঘাত পেয়ে এখন কাঁপতে কাঁপতে হাঁটেন। বাবার ইচ্ছে ছিল মেয়েকে শিক্ষিত করে ভালো ঘরে বিয়ে দেবেন। কিন্তু তার আর হলো না।
পূর্বধলা থানার ওসি মো. তাওহীদুর রহমান বলেন, নিহতের মা থানায় জানালে রবিবার রাতেই আলমগীরকে শ্রীপুর বালী গ্রাম থেকে আটক করা হয়। আসামি প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তাকে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন চাওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কোকের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করালে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়। একাধিকবার ধর্ষণ ও ধর্ষণের সময় ধস্তাধস্তিতে ইয়াসমিন আঘাতপ্রাপ্ত হয়। হাসপাতাল ও সুরতহাল সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।