চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামে তালুকদার বাড়ীর পাশে ঘন ঝোপঝাড়ের মধ্যে খুঁজে পাওয়া গেছে এক গম্বুজ বিশিষ্ট ছোট্ট একটি প্রাচীন মসজিদ। চারদিক থেকে মানুষ অাসছেন মসজিদটি দেখতে। ইতোমধ্যেই প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর থেকে কর্মকর্তারা এসে মসজিদটির ছবি তুলে নানা মাপজোখ করে নিয়ে গেছেন। অাশা করছি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এই স্থাপনাটিকে তাদের তালিকাভুক্ত করে সংরক্ষণের কর্মসূচীর অাওতায় নিয়ে অাসবেন এবং এই স্থাপনাটিকে ঘিরে রামপুর ইউনিয়নে গড়ে উঠবে পর্যটন কেন্দ্র।
প্রায় বছর চারেক অাগে কোনো একটি বইয়ে এ তথ্যটি পড়েছিলাম যে রামপুর ইউনিয়নে এধরনের একটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে। সেসময় থেকেই খোঁজ করছিলাম। একসময় শুনলাম এমন কছু একটি ছিলো বটে তবে সেটিকে নাকি ভেঙে ফেলা হয়েছে। খুব মন খারাপ লেগেছিল। তবুও অাবার কিছুদিন অাগে কয়েকবার রামপুর ইউনিয়নের অামাদের তরুন চেয়ারম্যান মামুনকে অনুরোধ করেছিলাম খুঁজে দেখতে।
কয়েকদিন অাগে হঠাৎ করেই মামুন এসে খবর দিলো সে শুনেছে ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ীর পাশে ঘন ঝোপঝাড়ের মধ্যে একটি স্থাপনা অাছে। সাথেসাথেই অনুরোধ করলাম সাবধানে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে স্থাপনাটিকে দৃশ্যমান করা যায় কিনা দেখতে। মামুন লোকজন নিয়ে খুব যত্ন সহকারে কাজটি করে ছবি ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে অামাকে পাঠায়। অামিতো মুগ্ধ! ছোট্ট, ইট সুরকীর তৈরী মসজিদটির গম্বুজটির চূড়োর অংশটি ভেঙে গিয়ে বড় একটি ফুটো হয়ে গেছে।
সম্ভবতঃ যে বিশাল গাছটি মসজিদের ওপরে চেপে বসে ডালপালা শেকড় দিয়ে সেটিকে অাষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে পুরো স্থাপনাটিকেই সম্পূর্ণ ঢেকে দিয়েছিল সে গাছটির কারনেই গম্বুজের চূড়োটি ভেঙে পড়ে। মসজিদটির ভেতরে মিম্বার, কোরান শরিফ রাখবার স্থান, সামনের দু’কোনায় দু’টি মিনারের ভাঙা অংশ অাছে। মসজিদটির পেছনে সাতটি কবরের অবস্থানও পাওয়া গেছে যেগুলোর দৈর্ঘ্য সাধারন কবরের তুলনায় বেশী।
মনে হচ্ছে মসজিদটির কিছুটা অংশ মাটির নীচে অাছে। অার জায়গাটা ছোট্ট একটা ঢিবির মত থাকায় মনে হচ্ছে হয়তোবা দৃশ্যমান অংশটুকুই পুরো মসজিদ না হয়ে এটি মাটির নীচে চাপা পড়ে যাওয়া বড় মসজিদের উপরের অংশও হতে পারে। মসজিদটি সুলতানি অামলের এরকম মতামত কেউ কেউ প্রকাশ করেছেন।
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান ও গবেষনার মধ্য দিয়ে হয়তো সব প্রশ্নেরই উত্তর মিলবে একদিন। অাপাততঃ এরকম একটি স্থাপনা অামাদের এলাকায় পাওয়া গেছে তা’তেই অামরা দারুন অানন্দিত এবং এ স্থাপনাটির যথাযথ সংরক্ষণ ও এটিকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছি অামরা। এ স্থাপনার ইতিহাস উদঘাটনের মধ্য দিয়ে অামরা এ অঞ্চলের অতীত ইতিহাস জানবার জন্যও অধীর অাগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকলাম।