Breaking News
Home / Breaking News / কনস্টেবল হত্যা: হাইমচর থানার ওসি ও এসআইসহ চার পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

কনস্টেবল হত্যা: হাইমচর থানার ওসি ও এসআইসহ চার পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

ষ্টাফ রির্পোটারঃ
মেঘনা নদীতে কনস্টেবল হত্যার ঘটনায় চাঁদপুরের হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে একই থানার এসআই মুকবুল, এএসআই সুমন সরকার এবং কনস্টেবল শাহাদাত হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

হাইমচর থানার কনস্টেবল মো. মোশারফ হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় এ তিন পুলিশ কর্মকর্তা এবং এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে শাস্তিমুলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওসি মহসীনকে ইতোমধ্যে রাজশাহী রেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এ চারজনের মধ্যে এএসআই সুমন সরকার এবং কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন কনস্টেবল মোশারফ হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনার সময় সঙ্গে ছিলেন। এ দু’জনকে ঘটনার পরদিনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলম সেদিন তার কর্মস্থলে ছিলেন এবং এসআই মুকবুল ঘটনার দিন রাতে হাইমচর থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। এ দু’ জনকে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে প্রাথমিকভাবে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে পুরো ঘটনাটি এখনও তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে চূড়ান্ত রিপোর্টের আলোকে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং নেপথ্য জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. মিজানুর রহমান।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বলেন, দু’ দিন আগে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওসিসহ ওই থানার কর্তব্যরত এই চার পুলিশ সদস্যের গাফিলতি ছিল চরমপর্যায়ে। তারা সময়মতো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়নি। তাছাড়া অস্ত্রসহ গিয়ে সেখানে অস্ত্র চালানো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে রাতের বেলা পুলিশ আসামি ধরতে গেলো অথচ লাইফ জ্যাকেট নিলো না কেনো? পুলিশের দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তিনজন পুলিশ, একজন গ্রাম পুলিশ, ওসির ব্যক্তিগত সোর্স রবিউল এবং দুই নৌকার মাঝিসহ আরও কয়েকজন স্টাফ ছিল। এরা সবাইই অক্ষত, অথচ হামলা হলো শুধু একজনের ওপর, আবার তিনি নদীতে পড়ে মারাও গেলেন। এ বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫/৬ জনকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতে হাইমচর থানার কনস্টেবল মোশারফ হোসেন মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হন। ঘটনার দু’ দিন পর ২৮ এপ্রিল রবিবার সকাল ১১টার দিকে বরিশাল জেলার হিজলা থানা এলাকায় মেঘনায় ভেসে ওঠে কনস্টেবল মোশারফের লাশ।

এ ঘটনার পরদিন ২৭ এপ্রিল শনিবার হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলম জানান, এএসআই সুমন সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নদীর ওপাড়ে অর্থাৎ নীলকমল ইউনিয়নের চরকোড়ালিয়া এলাকায় থানার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে যাচ্ছিল। এদিকে তখন নদীতে একদল জেলে জাটকা ধরছিল। জেলেরা ধারণা করেছিল পুলিশ তাদেরকে ধরতে আসছে। তখন জেলেরা সম্মিলিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ হামলার সময় কনস্টেবল মোশারফ নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন।

ওসি আরো জানান, ঘটনার সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনার পরদিন শনিবার রাতে নিহত কনস্টেবল মোশারফের স্ত্রী শামীমা আক্তার হাইমচর থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

Powered by themekiller.com