Breaking News
Home / Breaking News / বিএনপির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আলেম সমাজের সহায়তা চাইলেন হানিফ

বিএনপির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আলেম সমাজের সহায়তা চাইলেন হানিফ

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে তার দলের নেতাদের দিয়ে মিথ্যাচার করেছেন অভিযোগ করে। আওয়ামী লীগের অন্যতম মুখপাত্র এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলছেন: তারা মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। সরকারের প্রতিহিংসার কারণেই বেগম জিয়া কারাগারে এমনটা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এমন পরিস্থিতিতে তিনি দেশের আলেম সমাজকে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান।

শুক্রবার রাজধানীর শেরে-ই-বাংলা নগরস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আয়োজিত ‘৫ দিনব্যাপী রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

হানিফ বলেন: আমাদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগার। কী কারণে তিনি কারাগারে কারাগারে গেছেন? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে। এমনিতে কারো অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করা পাপ আর সেটা যদি এতিমের অর্থ-পয়সা হয় তাহলে সেটা মহাপাপ। আল্লাহ রব্বুল আলামীন সকলকে এতিমের পাশে থাকতে বলেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার পরেও এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সামান্য কয়টা টাকার লোভ সামলাতে পারে নাই!

খালেদা জিয়ার দুর্নীতি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে বলেই তিনি দণ্ড ভোগ করছেন বলে মন্তব্য করেন হানিফ।

বিএনপি নেতারা এটা নিয়ে মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন: বিএনপি নেতারা অনেক সময় বলেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। আপনাদের জানা উচিত, এই(জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের আমলে নয়। আর দণ্ড দিয়েছে আদালত, সরকার নয়।

বেগম খালেদা জিয়া এবং তার আইনজীবীরা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা চলাকালে বারবার সময়ক্ষেপণ করছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র বলেন: মামলা চলাকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ১৪৮ বার সময়ক্ষেপণ করেছেন। দশ বছর পরে এসে তিনি আদালতে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। দণ্ড দিয়েছে আদালত।

বিএনপি চেয়ারপার্সন অন্য মামলা গুলোও একই ভাবে আদালতকে অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের তিনবারের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। হানিফ বলেন: কারাগারের পাশে আদালত হওয়ার পরও অসুস্থতা দেখিয়ে বেগম জিয়া ৬ মাস আদালতে যান না। যেহেতু তিনি অসুস্থতা তার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই কারাগারে আদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তিনি কি করলেন? আদালতে গিয়ে বলে আসলেন, আমি এখানে আর আসবো না!

এখন বিএনপি এটি নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। হানিফ বলেন: বিএনপি এখন দেখাতে চাইছে এটা সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে সংবিধান পরিপন্থী ভাবে আদালত কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন: আপনাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এই কারাগারের মধ্যেই আদালত বসিয়ে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়েছিল তাহলে সেটাও কি অসাংবিধানিক ছিল। একই ভাবে আরো বারোশো মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার কে মেজর জিয়া এই কারাগারের মধ্যে আদালত বসিয়ে বিচার করে ফাঁসি দিয়েছিলেন। তাহলে সেটা কি সংবিধান পরিপন্থী ছিল? আলেম সমাজের মাধ্যমে এ প্রশ্ন আমি বিএনপি নেতাদের কাছে রেখে গেলাম।

খালেদা জিয়া তার মুক্তি চাইলে একমাত্র আইনি প্রক্রিয়ায়ই সেটা সম্ভব বলে মন্তব্য করে হানিফ বলেন: বেগম জিয়া, আপনি যদি নিজেকে নির্দোষ-ই ভাবেন, তাহলে কেন আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন না? বিএনপির বড় বড় ব্যারিস্টার-আইনজীবীরা কেন, তাদের নেত্রীকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারছেন না। প্রশ্ন রাখেন তিনি।

বিএনপি নেতার জনগণকে মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন: আপনি (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা খেয়েছেন, এটা প্রমাণিত। এখন তার দলের নেতারা মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। মনে রাখবেন, বর্তমান সরকার ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। কখনও অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয়নি।

আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হলে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র। বলেন: নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে যদি তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতি উনাকে ক্ষমা করেন, তিনি ক্ষমা পেতে পারেন। এছাড়া আর কোন পথ নেই।

খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের ছড়ানো মিথ্যাচারে জনগণের মধ্যে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তা দূরে আলেম সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান হানিফ। সমাজের মানুষ যেহেতু আলেমদের শ্রদ্ধার চোখে দেখে তাই তারা যেন সত্য তুলে ধরে এমন প্রত্যাশা রাখেন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইফা বোর্ড অব গভনর্স সিরাজ উদ্দিন আহমদ, ইফা সচিব কাজী নুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড.মোঃ বাহাউদ্দিনসহ অনেকে।

Powered by themekiller.com