অনলাইন ডেস্ক : চিকিৎসায় অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর ময়মনসিংহ শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধের করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন আব্দুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর চড়পাড়ায় বেসরকারি হাসপাতাল ‘শিলাঙ্গনে’ চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু রাফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার সকালে লিখিত অভিযোগ দেন তার বাবা।
“সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিকালে শিলাঙ্গন হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”
রাফিয়া মাহমুদা (১২) শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লেখক মাহমুদ বাবুর মেয়ে এবং চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত জানান, গত ২৬ অগাস্ট রাফিয়ার তলপেটে ব্যথা হলে বিকাল ৩টায় তাকে গাইনি চিকিৎসক শিলা সেনের কাছে নিয়ে যান মাহমুদ বাবু। পরে সন্ধ্যায় ডা. শিলা সেনের ব্যক্তিগত ক্লিনিক শিলাঙ্গনে ভর্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
এমদাদুল বলেন, সেখানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মনির হোসেন ভূইয়া দুইদিনব্যাপী নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২৮ অগাস্ট রাফিয়ার এপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত করেন। ওইদিন ভোর ৬টায় তার অপারেশন হয়।
“অপারেশনের পর রাফিয়ার অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পাশের একটি ক্লিনিকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।”
রাফিয়ার বাবা মাহমুদ বাবু বলেন, “মেয়ের তলপেটে ব্যাথা হলে ডা. শিলা সেনের কাছে তাকে নিয়ে যাই। চিকিৎসার ভার পড়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মনির হোসেন ভূইয়ার উপর।
“২৮ অগাস্ট মনির হোসেন আমার মেয়েকে অপরেশন করে বাসায় চলে যান। পরে রাফিয়ার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আর পাওয়া যায়নি; যার ফলে রাফিয়ার মৃত্যু হয়েছে।”
রাফিয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিককে ‘দোষী’ উল্লেখ করে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
এ ব্যাপারে চিকিৎসক মনির হোসেন ভূইয়া বলেন, “রাফিয়ার প্রথম মাসিক হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। তাই তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের অনুমতি নিয়ে মধ্যরাতেই অস্ত্রোপাচার করতে বাধ্য হই। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচানোর জন্য।”