Breaking News
Home / Breaking News / চান্দিনায় জুয়ার টাকার জন্য বউ বন্ধক

চান্দিনায় জুয়ার টাকার জন্য বউ বন্ধক

সিনেমা-নাটকে ‘বউ বন্ধক’ নিয়ে অনেক চলচ্চিত্র থাকলেও বাস্তব জীবনে বউ বন্ধকের ঘটনা বিরল। কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্রের ‘বউ বন্ধক’ নামে সিনেমাটির বাস্তব রূপ দিয়েছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার এক জুয়াড়ি। উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের নাওতলা গ্রামের মৃত শিরু মিয়ার ছেলে আল আমিন (২২) নামে এক যুবক জুয়া খেলায় সর্বস্ব হারায়। অবশেষে ৪ হাজার টাকা ধার নেয় সঙ্গের আরেক জুয়াড়ি তার চাচা কামাল উদ্দিন জিল্লুরের (২৭) কাছে থেকে। ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে নিজের বউকে বন্ধক দেয় পাওনাদার কামালের কাছে।

সূত্র জানায়, কামাল ও আল আমিনসহ বেশ কয়েকজন যুবক একসঙ্গে প্রতিদিন এলাকায় জুয়া খেলে। গত সোমবার আল আমিন জুয়ায় হেরে কামালের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ধার নেয়। পরদিন মঙ্গলবার আবারও জুয়ার আসরে বসার পর কামাল আল আমিনের কাছ থেকে আগের পাওনা টাকা চায়।

কিন্তু আল আমিন ওই টাকা দিতে পারছিল না। এসময় কামাল টাকার পরিবর্তে তার (আল-আমিনের) বউকে চেয়ে বলে, ‘টাকা দিতে না পারলে তোর বউকে দুই দিনের জন্য আমার কাছে বন্ধক দে। একপর্যায়ে আল আমিন রাজি হয়।

ভুক্তভোগী আল আমিনের স্ত্রী, জানান, বুধবার আমার চাচা শ্বশুর কামাল বিকালবেলা আমার বাড়িতে এসে বলে আমি রাতে আসব, তুমি রেডি থেকো। পরে আমি তাকে বললাম কেন আসবে। তখন সে বলে, তোমার স্বামী কিছু বলে নাই। আমি বল্লাম, না আমাকে কিছু বলে নাই। পরে আমি আমার স্বামী আল আমিনের কাছে জানতে চাইলে সে আমাকে কামালের সঙ্গে রাতযাপনের জন্য নির্দেশ দিয়ে বলে, ‘আজ রাতে কামাল আসবে। তার সঙ্গে দুই রাত কাটাতে হবে।’ এ নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। বিকালে আল আমিন বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে তার স্ত্রী বাড়ির অন্যান্য লোকজনকে বিষয়টি জানায়। আগের কথামতো বুধবার রাত ১০টায় কামাল আল আমিনের ঘরে প্রবেশ করলে আশপাশের লোকজন এসে কামালকে আমার রান্না ঘর থেকে আটক করে মারধর করে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পরদিন বৃহস্পতিবার বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কানে গেলে শুক্রবার রাতে মাধাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অহিদ উল্লাহের সভাপতিত্বে সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চু মিয়া, ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল হালিম, সাবেক মেম্বার আব্দুল মমিনের উপস্থিত সালিশে বউ বন্ধকদাতা আল আমিন ও বন্ধক গ্রহিতা কামালকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের জুতা পেটা করা হয়। এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল হালিম জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে সালিশ-দরবারে শুরু থেকে ছিলাম না মাঝামাঝি অবস্থায় সালিশে হাজির হয়েছি। সালিশের রায় অনুসারে তাদের জুতাপেটা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মাধাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. অহিদ উল্লাহ জানান, এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এলাকার সম্মানহানিও বটে।

Powered by themekiller.com