Breaking News
Home / অন্যান্য / বাবাকে অনেকে ভয় পেতেন: জসিমপুত্র

বাবাকে অনেকে ভয় পেতেন: জসিমপুত্র

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ‘অ্যাকশন হিরো’ জসিমকে জীবদ্দশায় অনেকে ‘ভয় পেতেন’ বলে জানালেন তার ছোট ছেলে এ কে রাহুল।
মঙ্গলবার বাবাকে নিয়ে গ্লিটজের কাছে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী হিসেবে তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিনয়শিল্পীর মধ্যে নার্ভাসনেস কাজ করত; ফলে ভয় পেতেন।”

ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে তার শুটিং সেটে যেতেন রাহুল।

তিনি বলেন, “বাবা সব কাজ খুব সিরিয়াসলি নিতেন। অ্যাকশন দৃশ্যগুলো বাস্তবিকভাবে ফুটে তুলতে চাইতেন। একটা ঘুষি মারতে হলেও ব্যাপারটা রিয়েলস্টিকভাবে তুলে আনার চেষ্টা করতেন। তার ধারণাও ছিল, জোরে মারতে হবে, বেশি ফেইক করা যাবে না। ফলে সবাই খুব ভয়ে থাকতেন।”

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ঢাকায় জন্ম নেওয়া জসিম। ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। পরে দেওয়ান নজরুলের ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে বিশাল জনপ্রিয়তা পান।
সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন জসিম। অল্প কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেই অ্যাকশন হিরো হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। দর্শকমহলে তুমুল জনপ্রিয় থাকা অবস্থায় ১৯৯৮ সালে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মৃত্যু হয় তার।

তার তিন ছেলে রাতুল, সামী ও রাহুলকে আগলে ধরে আছেন স্ত্রী নাসরিন জসিম। বাবার মৃত্যুর সময় রাহুলের বয়স ছিল পাঁচ কি ছয়। বাবার পথ ধরে একসময় অভিনয়ে নাম লেখানোর ইচ্ছা থাকলেও চলচ্চিত্রের ‘দুরবস্থার’ কারণে আর এ পথ মাড়াননি বলে জানান তিনি। তিনি বর্তমানে ট্রেইনরেক ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত আছেন। বাকি দুই ভাইও ব্যান্ডের সঙ্গেই যুক্ত আছেন।

পর্দায় বেশ খুনে মেজাজে তাকে দেখা গেলেও ব্যক্তিগত জীবনে জসিম অনেকটায় হাসিখুশি ছিলেন বলে জানান রাহুল। তার কথায় নিজের পরিবার তো বটেই আত্মীয়-স্বজনরাও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন।

“অনেকে বলতেন, বাবার মতো মানুষ আর পাওয়া যাবে না।”

মাত্র ৪৮ বছরে ওপারে পাড়ি জমানো এ অভিনেতার ছেলে বলেন, বাবার জন্য তাকেও মাঝে মধ্যে ‘মধুর বিড়ম্বনায়’ পড়তে হয়।

“একবার এক পরিচিতজনের বিয়েতে মিরপুর গেলাম। আগে থেকেই খবর রটেছিল সেখানে জসিমের পরিবার যাচ্ছে। রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ ভরে যায় আমাদের দেখার জন্য। বাবার প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি।
আবার অনেক সময় গণপরিবনে উঠলে যদি ভুলেও ড্রাইভার জেনে যায়, আমি জসীমের ছেলে তখনই ব্রেক করে; বলে ভাড়ায় নেবো না আপনার কাছ থেকে।”

জসিমকে ছাড়া পরিবারের ২০ বছর কেমন কাটছে?

সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানোর পর তিন ছেলেকে আগলে রেখেছেন জসিমের স্ত্রী নাসরিন জসিম।

“আম্মুই আমাদের বড় করেছেন। ফলে ওই ব্যাপারটা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। বাবাকে তো মিস করি। কিন্তু বিষয়টি মেনে না নিয়ে তো কোনো উপায় নেই।”

মৃত্যুর পর অনেক শিল্পীকে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ভুলে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে অনেকবার। জসিমকে ইন্ডাস্ট্রি মূল্যায়ন করেছে কি?

“হ্যাঁ। বাবার নামে এফডিসিতে একটা ফ্লোর হয়েছে বাবার নামে। আবার বিভিন্ন ইন্টারভিউয়ে তারকারা বাবাকে স্মরণ করেন। বিশেষ করে মিশা সওদাগর ,ওমর সানি, রিয়াজ অ্যাংকেল বাবার কথা উল্লেখ করেন ইন্টারভিউয়ে। ‍শুধু তাই নয় উনার মৃত্যুর ২০ বছর পরও ভক্তরা তাকে তো মনে রেখেছেন। এটাই আমাদের জন্য অনেক ভালো লাগার।”

error: Content is protected !!

Powered by themekiller.com