অনলাইন ডেস্ক : কুষ্টিয়া শহরে বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু আকিফা খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আকিফার বাবা সবজি ব্যবসায়ী হারুনর রশিদ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফয়সাল গঞ্জেরাজ পরিবহনের মালিক ইউনুস মাস্টার, চালক খোকন মিয়া ও তার সহকারী জয়নালকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন বলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান।
গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আকিফাকে কোলে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মোড় এলাকায় রাস্তা পার হচ্ছিলেন তার মা রিনা খাতুন। এ সময় পেছন থেকে ফয়সাল গঞ্জেরাজ পরিবহনের বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে আহত হয় আকিফা।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় আকিফাকে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে বুধবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে আকিফার মৃত্যু হয়। রাতে কুষ্টিয়ার চৌড়হাস কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
আকিফা ও তার মাকে বাসের ধাক্কার ঘটনাটি ধরা পড়ে স্থানীয় একটি জুয়েলারির দোকানের সিসি ক্যামেরায়।
সেই ভিডিওতে দেখা যায় রাজশাহী থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা গঞ্জেরাজ পরিবহনের বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলছিলেন চালক। অন্যান্য যানবাহন ওই বাসের পাশ কাটিয়ে সামনে নিয়ে চলে যাচ্ছিল।
এক পর্যায়ে রাস্তার উল্টো দিক থেকে শিশু কোলে আসা এক নারীকে দাঁড়িয়ে থাকা ওই বাসের সামনে দিয়ে পার হতে দেখা যায়। ঠিক তখনই বাসটি চলতে শুরু করে এবং রিনা বেগমকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
আকিফার বাবা হারুন অভিযোগ করেন, মামলায় তিনি দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড) হত্যার অভিযোগ আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাতে রাজি না হয়ে দণ্ডবিধির ২৭৯/৩৩৮ (ক) এবং ৩০৪ (খ) ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করেছে।
এরকম কোনো ঘটনায় আর কোনো বাবা-মাকে যেন সন্তানের লাশ বহন করতে না হয় সেজন্য দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন হারুন।
তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নাসির বলেন, “দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৩০২ ধারায় মামলা রুজুর বিষয়টি এখনও গেজেটভুক্ত হয়নি। তাই ওই ধারায় মামলা নেওয়া হয়নি।”