Breaking News
Home / Breaking News / মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য শীঘ্রই আসছে সুখবর

মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য শীঘ্রই আসছে সুখবর

ষ্টাফ রির্পোটারঃ
সম্প্রতি মাহাথির মোহাম্মদ সরকারের কাছে যেসব বাংলাদেশি প্রতারণার শিকার, তাদের আবারও বৈধ করে নিতে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে চিঠির মাধ্যমে ইতোমধ্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দেশটির সরকারের কাছে পাঠানো ওই চিঠির অনুলিপি পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা প্রতারিত কর্মীদের আবারও বৈধতা দেয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে চিঠি দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। এতে অবৈধভাবে কর্মরত সকল বিদেশি কর্মীদের বৈধতা দেয়ার ঘোষণা সরকারের কাছ থেকে আসবে- এমন আশায় প্রহর গুনছেন প্রতারিতরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার বিগত সরকার তার দেশে থাকা অবৈধ বিদেশিদের বৈধ হওয়ার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। সেই হিসাবে সরকার মাই-ইজি, ভুক্তি মেঘা ও ইমান এ তিনটি ভেন্ডরকে দায়িত্ব দিয়েছিল অবৈধ বিদেশি কর্মীদের নাম নিবন্ধন করতে। সে সময় এ ভেন্ডর কোম্পানিগুলো কোন কোম্পানিতে কতজন শ্রমিক প্রয়োজন সেটা যাচাইবাছাই না করে ঢালাওভাবে নিবন্ধন শুরু করে। এ তিনটি ভেন্ডরের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছিলেন।

হাইকমিশনের অনুরোধে ধাপে-ধাপে বাংলাদেশি কর্মীরা আড়াই বছর সময়। এ সময়ে নিবন্ধিতদের মধ্যে এর মধ্যে প্রায় তিন লাখের অধিক শ্রমিক ভিসা পেয়েছেন। তারপরও অনেকেই বৈধ হতে পারেননি। কারণ কারও নাম জটিলতা, কারও বয়স জটিলতা। আবার কেউ কেই স্থানীয় এজেন্ট ও দালালকে পাসপোর্ট ও রিংগিত দিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়ার কারণে বৈধ হতে পারেননি বলে শত শত অভিযোগ হাইকমিশনে জমা পড়ে।
প্রতারিত এসব বাংলাদেশি কর্মীদের জটিলতা নিরসন করে যাতে আবারও বৈধ করে নেয়া হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা। বৈধ হওয়ার ঘোষণা কত দিনের মধ্যে আসতে পারে তা নিশ্চিত নয়। তবে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মিশনের শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল।
প্রতারিত কর্মীরা বলছেন, ইচ্ছে করে কেউ অবৈধ হয়নি। দালালদের প্ররোচনায় পড়ে প্রতারণার শিকার হয়ে তারা অবৈধ হয়েছেন। ঋণগ্রস্ত প্রতারিত এসব কর্মীদের বৈধতা না দিলে দেশে গিয়ে তারা কী করবে? এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা। যাতে দ্রুত এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসে সে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে হাইকমিশন। এটা করতে পারলে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রতারিত কর্মীরা।
এদিকে মালয়েশিয়া গত বছরে মোট ১২ হাজারেরও বেশি অভিযানে ১ লাখ ৫৮ হাজার অভিবাসীকে নথিপত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা জানা যায়নি।দেশটিতে অবৈধ থাকা বিদেশি কর্মীদের বৈধ হওয়ার বিষয়টি দীর্ঘ আড়াই বছর ছিল আলোচনায়। অবৈধ কর্মীদের কাজ দেয়ায় এবং বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১ হাজার ৩২৩ জন নিয়োগকর্তাকে আটক করা হয়।অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও দেশটিতে অবৈধদের বসবাস ঠেকাতে বিভাগটি কাজ করছে এবং দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদে কোনো পক্ষের সঙ্গে আপস করা হবে না বলেও জানান দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছরে ৭২ হাজার ৩শ’ ৬১ জনকে পাসপোর্ট ও ভিসা জটিলতার কারণে অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ৮ (৩) ধারায় পাঁচ বছরের জন্য মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।দেখা গেছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। অন্যান্য দেশের শ্রমিকের তুলনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক খুব কম। কিন্ত বাংলাদেশি শ্রমিকদের অভিবাসন ব্যয় সবচেয়ে বেশি এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।একটি জরিপে জানা গেছে, প্রায় ৩৫.৪% পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ঋণ নেয়, ১৮.৭% টাকা ধারক থেকে ঋণ নেয়, স্থানীয় ব্যাংক থেকে ৭.২%, ভূমি বন্ধ করে ২.৬% এবং বিদেশি ব্যাংক থেকে ০.৩%।
২৩ জানুয়ারি বুধবার মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, মালয়েশিয়ার স্থগিত শ্রমবাজার খোলার ব্যাপারে সব কিছু চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পরবর্তী ধাপ যেটা আছে সেটা হচ্ছে এ দেশের কেবিনেটে উঠবে। এরপর আমাদের কেবিনেটে এটি এপ্রুভ করাতে হবে।এক প্রশ্নের উত্তরে হাইকমিশনার বলেন, এত কিছুর পরও এখনও যারা আকাশপথে অথবা অবৈধভাবে থাকার জন্য মালয়েশিয়ায় আসার চিন্তা করছে, তারা যেন ভুলেও এভাবে না আসে। এখন অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় আসা মানেই বিপদ। আর অবৈধভাবে এলে মালয়েশিয়া সরকার কোনোভাবেই তাদের কাজ করার সুযোগ দেবে না। বরং দেশের মান কমবে।তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা তাদের সম্মানের জায়গা করে নিয়েছে। সে সম্মানের জায়গাটুকু ধরে রাখতে হলে যে দেশে কর্মরত রয়েছেন সে দেশের আইনকে সম্মান

Powered by themekiller.com