অনলাইন ডেস্ক : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারের আপত্তির বিষয়টিকে ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য’ হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সিলেট সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের অবস্থানকে তিনি ‘কমিশনের জটিলতা’ বলে মনে করছেন না।
“নির্বাচন কমিশন তো পাঁচজনকে নিয়ে। পাঁচজনের মধ্যে একজন নোট অফ ডিসেন্ট দিতেই পারেন। ভিন্নমত থাকতেই পারে। এটাই তো গণতন্ত্রের বিউটি।”
রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য ছাড়া সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না বলে এতদিন বলে আসছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রাখার জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন।
বৈঠকের শুরুতেই সংসদ নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে বেরিয়ে আসেন মাহবুব তালুকদার। তবে অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে বৈঠক চালিয়ে যান সিইসি নূরুল হুদা।
সভা শেষে সিইসি সাংবাদিকদের জানান, কমিশন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতের ভিত্তিতে ঠিক করেছে- জাতীয় নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার করা হবে। সেজন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, আরপিও সংশোধন হোক- তা চাননি বলেই তিনি কমিশন সভা থেকে বেরিয়ে এসেছেন।
“আমি মনে করি, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কারণ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম চায় না।”
তার এই আপত্তি এবং সভা থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশনে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ থাকার প্রমাণ হিসেবে দেখাতে চান ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনেও গণতন্ত্র আছে। নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার অধিকার তার আছে। এর জন্য জটিলতা তৈরি হবে কেন? একজনের মত যেমন আছে, গণতান্ত্রিক ধারায় বাকি চারজনেরও মত আছে। তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, “যাদের শক্তি, সামর্থ আছে, জনগণের প্রতি আস্থা আছে, জন সমর্থনের ব্যাপারে যারা কনফিডেন্ট, তারা এত শর্ত আরোপ করে না।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি বলে আসছে, দুর্নীতি মামলার সাজায় কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে না নিলে ‘দেশের মানুষ’ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।
এ প্রসঙ্গে ১৯৭০ এর নির্বাচনের ইতিহাস টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, সে সময় বঙ্গবন্ধু কোনো শর্ত করেননি, কারণ জনসমর্থনের প্রতি তার গভীর আস্থা ছিল। আর বাংলাদেশের এখনকার পরিস্থিতিও সে রকম নয়।