বিশেষ প্রতিনিধিঃ
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে আন্তর্জাতিক লবিং শুরু করেছে বিএনপি এবং জামাত। ভারত, চীন, রাশিয়াসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল নির্বাচনের পর নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ এখনও নির্বাচনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর, নিউইয়র্ক টাইমস এক সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের নির্বাচনের কঠোর সমালোচনা করেছে। এই সম্পাদকীয় প্রকাশের পরদিনই ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নির্বাচন নিয়ে এক অনুমান নির্ভর গবেষনা প্রতিবেদনে নির্বাচনের নানা অভিযোগ তুলে ধরেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিউইয়র্ক টাইমস এর সম্পাদকীয় এবং টি আই বির প্রাথমিক প্রতিবেদন একই সূত্রে গাঁথা। এই দুটির পেছনেই দেশের একটি প্রভাবশালী সুশীল সমাজ গোষ্ঠির হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের এই সুশীল সমাজের অংশটি প্রকাশ্যে চুপ থাকলেও, গোপনে নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন দূতাবাসে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায়। দেশে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তৎপর দেশের সুশীল সমাজ, আর বিদেশে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলে তদ্বির করছে বিএনপি-জামাতের লবিস্ট গ্রুপ। জানা গেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। এ নিয়ে তারা সেখানে দুটি লবিস্ট ফার্মকে দিয়ে তদ্বির করছে। এজন্য যাবতীয় খরচ দিচ্ছে, যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মীর কাশেমের পরিবার। জানা গেছে, এই দরখাস্তে জাল ভোট প্রদান, আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করাসহ মোট ১১টি অভিযোগ করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে ওই নির্বাচন বাতিল এবং নতুন নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে জাতিসংঘ যেন ‘নির্বাচনের আপত্তিগুলো বিবেচনা করে একটি বিবৃতি দেয় যে অনুরোধও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতির আশায় তৎপর বিএনপি-জামাত। নিউইয়র্ক টাইমসের পর আরও মার্কিন গণমাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বিপুল অর্থ খরচ করা হচ্ছে। এসবের লক্ষ্য একটিই, তা হলো বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গটি যেন মার্কিন কংগ্রেস এবং পররাষ্ট্র শাখায় দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ এবং সার্টডাউন জটিলতায় ‘বাংলাদেশ নির্বাচন’ প্রসঙ্গটি হালে পানি পাচ্ছে না। তবে, বিএনপি-জামাত লবিস্টরা চাইছে অন্তত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশীয় ডেস্ক থেকে যেন একটি নেতিবাচক বিবৃতি আসে। আর এসব করার জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার বাজেট ধরা হয়েছে।
শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়, নির্বাচন সম্পর্কে নানা কুৎসা এবং আপত্তিকর তথ্য সম্বলিত একটি রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও যেন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিবৃতি দেয় সেজন্য সেখানেও লবিং চলছে। একাধিক সূত্র বলছে, ইসলামী দেশগুলো যেন নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় সেজন্যেও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ঐ চেষ্টা সফল হয় নাই। একটি সূত্র বলছে, বিএনপি-জামাত জোট এখন দেশে আন্দোলন করার চেয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজ করছে। আর এই ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক জিয়া।