Breaking News
Home / Breaking News / প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে অনুদান নিচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে অনুদান নিচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
জাতীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর অসুস্থ শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মোজাম্মেল হকের চিকিৎসার জন্য নগদ ১ লাখ টাকার চেক এবং ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান হিসেবে প্রদান করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অনুদানের চেক ও সঞ্চয়পত্র অসুস্থ নেতা মোজাম্মেল হকের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে পরে আবারও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
এ সময় মোজাম্মেল হকের ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হক বাবু ও শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেরপুর-১ (সদর) আসনের এমপি আতিউর রহমান আতিক উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে মোজাম্মেল হকের ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হক বাবু তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পেয়ে আমরা খুবই খুশি ও আনন্দিত। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। তিনি যেন তার সেবার মাধ্যমে বাংলার প্রতিটি ঘরকে সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে তুলতে পারেন আল্লাহর কাছে সেই কামনা করছি।
একই সঙ্গে বাবার অসুস্থতার খবরটি সময়মতো ভালোভাবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য যুগান্তরের শেরপুর জেলা প্রতিনিধিসহ যুগান্তর পরিবারের সবার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মোজাম্মেল হকের মেয়ে মল্লিকা হক ও বড় ছেলে মো. মাহাদী মোহসানুল হক লেমন ও ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হক বাবু।
অসুস্থ মোজাম্মেল হক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং অনুদান গ্রহণের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে খুশিতে আপ্লুত হয়ে বলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে অনুদান পেয়ে আমি আনন্দিত। পাশাপাশি সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিকদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোজাম্মেল হক দীর্ঘ ২১ বছর দায়িত্বপালন করেন। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে অসুস্থ তিনি। অর্থসঙ্কটে অবহেলা অনাদরেই দিনাতিপাত করছিলেন। তিনি লিভার জটিলতাসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হন।
এক সময়ের অনর্গল যিনি বক্তব্য দিতেন এখন তিনি অসুস্থতার কারণে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না। হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরাও করতে পারেন না। দুধ ও সামান্য জাওভাতসহ তরল জাতীয় খাবার ছাড়া কোনো কিছুই তিনি খেতে পারেন না।
রাজনীতি থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে একেবারেই দূরে সরে আছেন মোজাম্মেল হক। কেউ খোঁজ রাখেননি অনেক দিন। অবশেষে একসময়ের অসম সাহসী বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রতিবাদ সভা করতে গিয়ে কারাবরণকারী এ রাজনৈতিক নেতার পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মোজাম্মেল হকের মতো সৎ, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী নেতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনেকে এই খবরে চতুর্থবারের মতো দায়িত্ব নেয়া সরকারপ্রধানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
শেরপুর শহরের বাগরাকশা মহল্লায় মোজাম্মেল হকের জন্ম। প্রায় ৮০ বছর বয়স্ক এই নেতা শেরপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন।
১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা ও তার পরিবারে সদস্য নিহত হওয়ার পর এর প্রতিবাদে সভা করার অপরাধে ১৭ মাস ময়মনসিংহ জেলা কারাগারের কারারুদ্ধ ছিলেন।

Powered by themekiller.com