ফরিদগঞ্জ অফিস: ‘হলি মিশন একাডেমী’র বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ‘শিক্ষার জন্য এসো, সেবার জন্য বেরিয়ে যাও” – এ স্লোগানে অব্যাহত রয়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ফরিদগঞ্জ উপেজলার কড়ৈতলী চৌরাস্তা এলাকায় বিদ্যালয় মাঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত মাতৃছায়া’র তৃতীয় শাখা ‘হলি মিশন একাডেমী’। প্রায় বন্ধ হওয়া এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে গ্রহণ করে মাতৃছায়া কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষ। এ হিসেবে নবতর এ যাত্রায় বিদ্যালয়ের এক বছর পূর্ণ হলো। “এক বছরে পথচলা সূচনালগ্ন মাত্র। এ সামান্য সময়ে বলা যায় আমরা এখনও ভ্রুণ পর্যায়ে রয়েছি। তবে, আমাদের বিশ্বাস অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা লক্ষে পৌঁছতে পারবো” – বলছিলেন মাত্রছায়া কিন্ডারগার্টেন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মাসুদ।
বিদ্যালয়ের ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম মাসুদ এর উপস্থানায় পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন, আবু সফিয়ান, ফাতেমা আক্তার সুমী প্রমুখ। সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, পড়ালেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে জীবন ও জগতকে জানা, জ্ঞান আহরণ করা। দীর্ঘকাল যাবত বলা হয় ছেলেমেয়ে পড়ালেখা শিখে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি হবে। তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেন, এ ধারণা ভুল। জীবন ও জগত ব্যাপীয়া জ্ঞান আহরণ করতে পারলে মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ছেলেমেয়েরা সমাজ ও দেশের কাজে নিয়োজিত হতে পারবে। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ‘জ্ঞান আহরণ’ থেকে পিছিয়ে শুধু চাকরির উদ্দেশ্যে পড়ালেখা করলে সে শিক্ষা অসমাপ্ত থাকবে। ছেলেমেয়েরা এক ধরণের স্বার্থপর জীবন যাপনে অভ্যাস্ত হবে। এর ফলে আমরা দেখছি, লেখাপড়া করে তথা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেও কোন ছেলেমেয়ে পরিবার ও সমাজ তথা দেশের কাজে আসছে না। চোখের সামনে মানুষের ওপর নির্যাতন দেখেও অন্যদিকে দৃষ্টি ফেলে চলে যায়। শত নির্যাতনেও তার হৃদয় কাঁদে না। কখনও দেখা ও শোনা যায় বাবা-মা’র দায়িত্ব নেয় না। কারও ঠাঁই হয় বৃদ্ধাশ্রমে। ফলে, শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ সামাজিক প্রয়োজনে ও সামাজিক উদ্দেশ্যে। এমন করে শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ছেলেমেয়েরা নিজের, পরিবারের ও দেশ সেবায় এগিয়ে আসবে। অন্যথায়, মানুষের সাথে মানুষের দূরত্ব আরও বাড়বে। মানুষ আরও বেশি এককেন্দ্রিক হবে। যা আমরা ইতোমধ্যে দেখছি। ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম মাসুদ বলেন, সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ও প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে দিয়ে অভিভাবক নিশ্চিন্তে বসে থাকলে সন্তানের যথাযথ পড়ালেখা হবে না। বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পর সন্ধ্যা হতে রাত ও সকালে বাবা মায়ের ভূমিকা অফুরন্ত। যারা এ দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সন্তান পড়ালেখায় ভালো করার সম্ভাবনা আছে। অন্যথায়, বড় রকমের খেসারত দিতে হতে পারে।
আলোচনা শেষে, বার্ষিক পরীক্ষায় বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী, শ্রেণিকক্ষে সর্বোচ্চ উপস্থিতিসহ সকল শিক্ষার্থীর হাতে পুরষ্কার হিসেবে শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। পুরষ্কার পেয়ে শিশুদের মুখে হাসি ফুটেওঠে। উপস্থিত অভিভাবকগণও আনন্দে আপ্লুত হন। তারা এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। এছাড়া, উপস্থিত অভিভাবক, অতিথি ও শিক্ষকদের হাতেও উপহার তুলে দেওয়া হয়।