Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

সত্তা
–তন্ময় সাহা

জোড়া কতোক জুতো আমার বরাবরই ছিলো, আছেও;
অথচ এক জোড়া বৈ নিজস্ব পা আমার নেই, ছিলো-ও না!
জুতাগুলো পায়ের জন্য…
মানানসই না হওয়ায় কিম্বা পায়ে ব্যথা লাগায়;
বহুবার বহুরূপী ঝকমারি-জুতো, আমি ফেলে দিয়েছি।

প্রিয় পা-জোড়া, তোমাকে ফেলে দিইনি; দেবোও না।

২৮/১০/২০২২

——————————————–

তারিখ ঃ – ২৮/১০/২০২২ ইং ।

সূরা নাবা – মক্কী ( বঙ্গানুবাদ )
আয়াত ঃ ৪০ , রুকু – ০২ ।।

আমি কি ভূমিকে বিছানা
ও পর্বতকে করিনি কীলক-সদৃশ ?
আমি তোমাদের কে করেছি সৃষ্টি
জোড়া জোড়া ,
তোমাদের বিশ্রামের জন্য
দিয়েছি নিদ্রা ,
রাত্রিকে করেছি আবরণ স্বরূপ
এবং
দিনকে করেছি জীবিকা আহরণের সময় ।
এবং আমি নির্মান করেছি
তোমাদের উধর্বদেশে মজবুত সপ্তাকাশ ,
এবং
সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল-দীপ
এবং
আমি করি মেঘমালা হতে
প্রচুর বৃষ্টিপাত ;
আমি উৎপন্ন করি
তা দিয়ে শস্য ও উদ্ভিদ ,
ও ঘন সন্নিবিষ্ট উদ্যান ।
নিশ্চয় নির্ধারিত আছে
বিচার দিন ;
সেদিন শিঙ্গায় দেয়া হবে ফুঁৎকার
এবং
তোমরা দলে দলে হবে সমাগত ,
এবং
আকাশকে করা হবে বিদীর্ণ ,
ফলে তা হবে বহুদ্বার বিশিষ্ট ,
এবং
পর্বতকে করা হবে চলমান ,
ফলে সেটা হবে মরীচিকাবৎ ।
জাহান্নাম থাকবে প্রতীক্ষায় ;
এ হবে অবাধ্যদের আশ্রয়স্থল ,
আমি আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে
তোমাদের করলাম সতর্ক ,
যেদিন তার কৃতকর্ম
মানুষ করবে প্রত্যক্ষ
এবং
সত্য প্রত্যাখ্যানকারী ( তখন ) বলবে
‘ হায় ‘ আমি যদি
হয়ে যেতাম মাটি ।।
( আয়াত সংখ্যা – ০৬ থেকে ২২ এবং ৪০ ) ।

শরীফ নবাব হোসেন ।
📷

——————————————–
. মন-সুজন
বনানী সিনহা
**********************
আমি তোমার রাত্রি হতে চাই
হতে চাই না ঘুমভাঙানিয়া তাই।
মেনে নিও দূর আকাশে আমি মঙ্গল বাতি
দহনের ক্ষণে স্নাত হয়ে;চলো জ্যোৎস্নায় মাতি।
শুক তারা হয়ে তোমায় ছুঁয়ে যাবো
মন-সুজনের মিষ্টি হাসি হয়তো দেখতে পাবো।
নইতো আমি দুঃখ তোমার কিংবা ভালবাসা
বন্ধু হয়ে থাকবো ,করি এমনি আশা।
নাই বা হলো তোমাতে আমাতে দেখা
নিরবধি থাকুক, শুভকামনার রেখা।
============
রচিত-৬ ই মার্চ ২০২২। নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্র।

——————————————–
দু:খ তিথির গান
“”””শহিদ মিয়া বাহার””

কিছুটা বসন্ত আমার কিছুটা শ্রাবণ
কিছুটা বৃষ্টি ছোঁয়া কিছুটা প্লাবন!

কিছু কিছু দু:খ কিছু কিছু শোক
বাউরি বাতাসে না হয় কাব‍্য গাঁথা হোক!

যতটা পেয়েছি আমি হারিয়েছি তত
আর কিছু নেই হারাবার
কিছু কিছু ক্ষত গল্পের মত
এভাবেই জীবনের খেয়া পারাপার!

আমার দু:খ গুলো থাক আমারই শ্লোক
দু:খ দিয়ে এবার কিছু
আবির মাখা হোক!

——————————————–

ভাইফোঁটার মিষ্টি
দোলা ভট্টাচার্য্য
28.10.2022

ভাটপাড়ার লোক বড় মিষ্টি-খোর। যে কোনো অকেশনে মিষ্টির দোকানে দেখো, ভিড় উপচে পড়ছে। আর একটু আধটু নাকি! পঞ্চাশ টা রসগোল্লা, পঞ্চাশ টা সন্দেশ, পঞ্চাশ টা পান্তুয়া। এরপরেও দাঁড়িয়ে খোঁজে, আর কি নেওয়া যায়। আমার চোখে চোখ পড়তেই, বৌটা হেসে বললে, “একটু বেশি করেই নিয়ে যাই। এক সপ্তাহ আর আসতে হবে না।” কথা গুলো বলে মিষ্টির পোঁটলা সহ তিনি দোকান থেকে নেমে এলেন। তারপর বাইক বাহিনী হয়ে বেরিয়ে গেলেন।
ভাইফোঁটা র সময় মিষ্টির দোকানে ঢোকে কার সাধ্য। দাদা, আমার টা দিন, দাদা, আমার বিলটা করুন, দাদা, আমায় চেঞ্জ টা দিয়ে দিন, কেন দাঁড় করিয়ে রেখেছেন? দোকানি হিমশিম খাচ্ছে খদ্দের সামলাতে। যে দোকানেই যাও, ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই রব। একসময়ে আমিই যেতাম দোকানে। নিজে পছন্দ করে ভাইফোঁটার জন্য মিষ্টি কিনে আনতাম কত আনন্দ করে ।এখন যেন একটু দেখনদারীর ব্যাপার এসেছে। গতবছর ভাইফোঁটার মিষ্টি কিনতে গিয়ে দেখি, একজন আর একজন কে বলছে “আমি ভাইফোঁটার জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকার মিষ্টি কিনলাম।” ২য় জন বলছে, “আমার আরো বেশি। আমার দুটো মাত্র ভাই। তাদের জন্য আমি পাঁচ হাজার টাকার মিষ্টি কিনেছি”। (আসলে এই দোকানে মিষ্টি তৈরি হয় না। এরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ভালো কিছু মিষ্টি নিয়ে আসে। আর সেগুলো কোনো টা পঞ্চাশ টাকা এক পিস, কোনো টা ষাট, সত্তর, একশো থেকে দেড় শো টাকা পিস। আর এইসব মিষ্টি নিতে লোকে হামলা চালায়)
১ম জন বলে, “না বাবা। আমার ভাইয়েরা অত খাইয়ে নয়”।
২য় জন বলে, “আরে না না। আমার দুটো ভাইও খেতে ই পারে না একদম। তবু তো দিতে হয়, তাই না! ”
আসলে পুরোটাই দেখনদারীর ।
এবছর আর ভিড় ঠেলে এইসব নাটক দেখতে ইচ্ছে হল না। তাই বাড়িতেই বানিয়ে ফেললাম কয়েকটি আইটেম। প্রথম আইটেম, আমার মস্তিষ্কপ্রসূত। এটার কোনো নাম আমি দিই নি।
উপকরণ :—পাঁচশো বেসন, পাঁচশো চিনি, ছোট মিল্কমেডের কৌটো, ছোট এলাচ গুঁড়ো, সাদা তেল, ঘি।
প্রস্তুত প্রণালী :—প্রথমে গাঢ় করে চিনির রস করে তার সাথে মিল্কমেড মিশিয়ে ছোট এলাচ গুঁড়ো দিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি হবে । কড়াইতে খানিকটা সাদা তেল ও দুই চামচ পরিমাণ ঘি দিতে হবে (শুধু ঘি দিয়েই এটা করার নিয়ম। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমি সাদা তেলের সাথে অল্প ঘি ব্যবহার করেছি) । তেল গরম হলে তার মধ্যে বেসন দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে ভাজতে হবে। ডেলা পাকিয়ে গেলে খুন্তি দিয়ে দ্রুত হাতে ভেঙে নিতে হবে। ভাজা বেসনে সোনালী বাদামী রং ধরলে তার মধ্যে চিনির রস আর মিল্কমেডের মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে। খুব দ্রুত হাতে পাক দিতে দিতে তৈরি হবে একটা ঘন মিশ্রণ।নামাবার আগে এলাচ গুঁড়ো ছড়িয়ে একটা ঘি মাখানো থালার ওপর মিশ্রণ টি ঢেলে ছড়িয়ে দিতে হবে। ঠান্ডা হলে যে কোনও আকৃতি দিতে পার।
পাকের ওপরেই নির্ভর করছে এই মিষ্টান্নের স্বাদ। পাক ঠিক না হলে, হয় চিট হয়ে যাবে, নাহলে খুব শক্ত হবে।
২য় আইটেম ভাপা দই। এটা তৈরীর অনেক ঝামেলা আছে। তবে আমি বাবা সোজা সাপটা। ওইসব ঝামেলার মধ্যে নেই। তাই ফাঁকিবাজি বিদ্যে দিয়েই বানিয়ে ফেললাম জিনিস টা।
উপকরণ :—এককিলো টক দই (মিষ্টি দই দিয়েও হয়। সেক্ষেত্রে খাবার টা কিটকিটে মিষ্টি হয়ে যাবে), দুকৌটো (বড়) মিল্কমেড, ছোট এলাচ গুঁড়ো, কাজু, কিসমিস ।টক দই টা থেকে আগে সমস্ত জল ঝরিয়ে নিতে হবে। জল ঝরানো দই এর সাথে মিল্কমেড মিশিয়ে ভালো করে ফেটাতে হবে। মিশ্রণের মধ্যে চারটে ছোট এলাচ গুঁড়ো করে দিতে হবে। মিশ্রণটি এবার একটা টিফিন কৌটোয় ঢেলে কাজু, কিসমিস ছড়িয়ে টিফিন কৌটোর মুখ বন্ধ করতে হবে। এবারে একটা প্রেসার কুকারে খানিকটা জল দিয়ে তার মধ্যে টিফিন কৌটো টা বসিয়ে কুকারের মুখ বন্ধ করা হল। একটা সিটি পড়লে গ্যাস কমিয়ে দিয়ে দশ মিনিট। ঠান্ডা হলে খুলে দেখো, ভাপা দই তৈরি। যদি না হয়, আরও কিছুক্ষণ এইভাবেই কুকারে রান্না করতে হবে। ইউটিউব খুলে দেখো, এটা তৈরির হাজারটি রেসিপি পাবে। কিন্তু সব থেকে নির্ঝন্ঝাট রেসিপি এটাই।
তিন নম্বর আইটেম, কুচো নিমকি। এটা সকলেই জানেন। তাই আর বললাম না।
আচ্ছা, কেমন হতো, যদি একটা বোনফোঁটারও অনুষ্ঠান থাকত? বোনেরা বেশ সেজে গুজে বসে ভাইয়ের হাতে ফোঁটা নিত! ভাই যত্ন করে রেঁধেবেড়ে তাদের খাওয়াতো! জামাইষষ্ঠীতে এখন কেউ কেউ বৌমাষষ্ঠীর স্বপ্ন দেখছেন। আমি নাহয় একটা বোনফোঁটার স্বপ্ন দেখলাম। আর কারো মনের অন্দরে এমন একটা সুন্দর স্বপ্ন কি লুকিয়ে নেই!
যাইহোক, কেমন লাগলো আমার এই মিষ্টির রেসিপি বলবেন কিন্তু।

——————————————–

প্রতিদিনের কবিতা
বিষয়– উন্মুক্ত
শিরোনাম– একটাই চাবি
সৃজনে— নবগোপাল চৌধুরী
তারিখ– 28/10/2022

কবিতা—# একটাই চাবি #

ভাবছো কেন আকাশ পাতাল
মরছো কেন ভাবি
হো’ক না তালা যতই বেতাল
একটাই তো চাবি ।

এক চাবিতেই বন্ধ যে হয়
এক চাবিতেই খোলে ,
ভালোই কখন মন্দ যে হয়
সদাই দ্বন্দ্বে দোলে ।

ছন্দে আনার পন্থা অনেক
জানতে হবে আগে ,
যুক্তি- তর্কে মাতলে ক্ষণেক
সমাধান কি জাগে ?

দীর্ঘকালীন ভাবনা যে চাই
সজাগ স্মৃতি- বক্ষ ,
জ্ঞান- চেতনার বিকল্প নাই
ধ্যানেই আনে মোক্ষ ।

‘নিরপেক্ষ’ – ‘মহানতা’ ধোঁয়া
গুলিয়ে দিতেই দক্ষ ,
মুখোশী প্রতিপক্ষ পায়না ছোঁয়া
চায়না সঠিক লক্ষ্য ।

# সমাপ্ত #

Powered by themekiller.com