Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

একান্ত অনুভব
শ্যামল চন্দ্র ভাওয়াল
(তাঃ–০৮/০৯/২২)

হয়েছিল ঝড়
স্বজন করেছে পর,
চিনেছি প্রতিবেশী –
করে শুধু আহাজারি।

কেঁদেছি অন্তরে
স্থীর ছিলাম অবয়বে,
দেখেছি তৃণলতা –
ঝড়ে করে নড়াচড়া।

– হয়তো শিখেছি এই-ই।

আশেপাশে ছিল যত
জড়িয়ে ধরেছি তত,
বধির হয়েও বলতে চেয়েছি-
সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি।

নিয়তির লীলাখেলা
আমি শিশু আলাভোলা,
প্রমাণ, দিবো-কী হায়
কালের সমীপে –
মহাকাল বয়ে যায়।

(বদরপুর
কুমিল্লা
সন্ধ্যা -৮টা)

——————————————–
হৃদয়ের আকুতি
মোঃবখতিয়ার হোসেন মন্ডল।
০৯/০৯/২০২২ইং।

রেমিট্যান্স যোদ্ধা আমি আমার অনেক কাজ
শরীর মন ক্লান্ত তাই চোখে ঘুমের ভাজ,
ঘুমের ঘরে স্বপ্নে খুঁজি দোবো তোমায় চুম
ঘুমেই যে বিভোর আমি সে কি আমার ঘুম।

ঘুমিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি ঘুম যেন না ভাঙে
ঘুমের মাঝে নৌকা বাই আমার মন-গাঙে,
তুমিও ওগো স্বপ্ন দেখো মুখে রেখে হাসি
তোমার আমার স্বপ্নে যেন জনম জনম বাঁচি।

ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা অপরাধ তো নয়, অপরাধী যদি হতো
এ জীবনে মৃত্যুদন্ড পেতাম আমি শত শত
ঘুমের ঘরে আশায় থাকি স্বপ্নে তোমায় পাবো বলে
এমন ভলোবাসা দিও না আমায় যেন ভাসি চোখের জলে

ঘুমের ঘরে স্বপ্ন দেখবো সমস্যাতো নাই
মন মেজাজ খারাপ হয় ব্যঘাত যখন পাই,
ঘুমের মাঝেই সুখ আমার দেখি স্বপ্ন সব
দুচোখ থেকে ঘুম কেড়ো না আমার প্রিয় রব।

——————————————–

প্রতিদিনের কবিতা
বিষয়— উন্মুক্ত
শিরোনাম—পিপাসা
সৃজনে— নবগোপাল চৌধুরী
তারিখ—08/09/2022

কবিতা——# পিপাসা #

পিপাসা জন্ম নেয় বুকের ভেতর
আস্বাদ এনে দেয় সুখের দোসর !
শব্দ-বাক্য সাক্ষ্য, সাক্ষী থেকে যায়
মূক বর্ণ, ধ্বনিময় আপন বিভায়–

প্রকাশ ব্যঞ্জনাময় স্বস্তি আনে প্রাণে
বিকাশ বিস্তৃত হয় জ্ঞানলব্ধ টানে,
সুরের ঝংকার মূর্ত হয়ে ওঠে গানে
রঙের বৈচিত্রে বিচিত্র ফুলের বাগানে ।

পিপাসা বিকৃত নয় প্রকৃতির দান
পঞ্চেন্দ্রিয় জোড়া সোহাগ সোপান ,
একই অনুভূতি দ্যুতি চ্যুতি হেরফের
প্রভেদ পাবে না খুঁজে শিশু– বৃদ্ধের ।

কামনা-বাসনা-মোহ যাই বলা হোক ,
ভীত – প্রীত- আমোদিত সংক্রামিত চোখ ।
সুগন্ধ শরীরীমায়া তরঙ্গিত দেহ
মায়াজাল বিস্তারিত অনুরাগ স্নেহ,
আঘ্রাণ মূর্ত হওয়া শ্বাস–ও প্রশ্বাস
অনন্ত চোখের ক্ষুধা অশান্ত বিশ্বাস ,
গাছ পাতা ফুল ফলে বিতরিত সুধা
মনের পিপাসা মেটাতে পারে নি বসুধা !!

# সমাপ্ত #

——————————————–

কালজয়ী ভাষণ
_____________// সজীম শাইন,

জয়বাংলার গানে বাঙালির মনে নিয়েছে আসন
আকাশে-বাতাসে বাজে কালজয়ী অমর ভাষণ।

যে ভাষণে ছিলো সাম্য-স্বাধীনতার কথা
মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছে অদম্য সাহসিকতা
বাঙালি পেয়েছিলো মুজিবের মতো নেতা
সেই ভাষণে জেগে ওঠেছিলো আমজনতা
এদেশ থেকে বন্ধ হয়েছিলো সকল প্রহসন।।

সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন হৃদয় মাঝে
সেই প্রেরণাই শক্তির বীণা হয়ে বাজে
তাঁরই নামে রচিত আজ শত গান কবিতা
একশ বছরে এলো সে এক মহান নেতা
ফিরে এলো তার হাতে বাংলার শাসন।
_______________________________
সভাপতিঃ দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতি।

——————————————–

পাঁঠার দুধ

বিষ্ণুপদ বিশ্বাস

গাইবান্ধার পোলা মনিরুল মিঁয়া,
চকচকা গ্রামে থাকে পরিবার নিয়া।
সাত পুরুষের বাস এই গ্রামে তার,
জীবনের যুদ্ধে সে মানে নাই হার।
ছ’টি পেট পরিবারে রোজগেরে একা,
‘সুখ’ বলে কিছু নাই কিসমতে লেখা।
রোগ শোক সবকিছু ভুলে রোদে জলে,
গরুর দালালি করে সংসার চলে।
তল্লালে ঘুরে ঘুরে মনিরুল রোজ,
মুরগির মত করে খাবারের খোঁজ।

ঘরে বসে থাকে না সে সদা খোঁজে টাকা,
অভাগার ঘোরে না রে ভাগ্যের চাকা!
ভুল করে ‘লস’ খায় কেনা গরু বেচি,
ভুখা শিশু কোলে বিবি করে চেঁচামেচি।
মাঝে মাঝে কালবৈশাখী ঝড় বয়,
দাঁতে দাঁত চেপে মিঁয়া মুখ বুজে রয়।
বারোমাস লেগে থাকে অনটন ঘরে,
তবু রোজ পাঁচবার নামাজ সে পড়ে।
নাই নাই গীত ভাল লাগে না রে আর,
আক্ষেপ দয়া মায়া নাই আল্লার!

ব্যবসার কাজে মিঁয়া গেলে চটগাঁয়,
খোদা তার দিকে ঠিক মুখ তুলে চায়।
লাঠি হাতে একজন থুরথুরে বুড়ি,
ছেড়ে দিয়ে বসেছিল ছাগ গোটা কুড়ি।
পাহড়ারতলীর পথে হাঁটবার কালে,
মিঁয়া দেখে কচিপাঁঠা ছাগলের পালে।
তরু তলে হেরি তারে থেমে যায় হাঁটা,
রূপ গুণে দালালের মন কাড়ে পাঁঠা!
বাজার দরের চেয়ে গুণে বেশি কড়ি,
বাড়ি ঢোকে মিঁয়া টেনে কোষ্টার দড়ি।

অতিশয় টানে পাঁঠা ম্যাঁ ম্যাঁ করে ওঠে,
গরু নয় পাঁঠা হেরি বিবি যায় চটে!
চোখ তুলে কপালেতে বিবিজান চায়,
অসহায় হরিণের তির বেঁধে গায়!
চণ্ডীর রূপ ধরি কয় থেমে থেমে,
“গোরু থুয়ে পোড়িছো নি ছাগোলের পেমে ?
ঘরে নাই দানা পানি ফকিরের বিডা,
নিজিরই তো জোডে না খাতি দেবে কিডা ?”
ফাঁদে পড়ে কাঁদে বগা মনে মনে ভাবে,
কীভাবে এ হিমালয় ডিঙিয়ে সে যাবে!

পোলা এসে যোগ দেয় আম্মার সাথে,
গোদে হয় প্রাণঘাতী বিষফোঁড়া তাতে!
পাঁঠা লয়ে মিঁয়া পড়ে ভারি মুশকিলে,
বুদ্ধি খরচ করে বলে ঢোক গিলে-
“চটো ক্যান ? পাইছি তো ভারি কোম দামে,”
সস্তার কথা শুনে বিবিজান থামে।
সেই ফাঁকে মিঁয়া কয়,”দিল নিছে পাঁঠা,
তাই বলে সতীনেরে মাইরো না ঝাঁটা!
তাহোলি তো ঠিক ঠিক মোরে যাবো শোকে,
যতনে রতন মেলে ক’য়া গেছে লোকে।”

জাদুকরী কথা বাণে বিবিজান হারে,
মিঁয়ার মতন শেষে ভালবাসে তারে।
বদরাগী পাঁঠা নয় যায় না সে চটে,
রূপে গুণে নয়নের মণি হয়ে ওঠে।
অভাবের সংসারে পেট বাড়ে ফের,
অভাবের তবু কিছু পায় না সে টের!
না পাবার বেদনা যে আছে কতশত,
তবু তার দিন কাটে পোলাডার মত!
ছাগ প্রেম হেরি লোকে কত কথা বলে,
আদরে যতনে পাঁঠা তবু বেড়ে চলে।

একদিন মিঁয়া-বিবি মিলে দেখে ওরা,
অণ্ডকোষের পাশে ওলানের জোড়া!
যোনিদ্বার নাই তার মলদ্বার আছে,
নড়লেই পাঁঠা তার বাট জোড়া নাচে!
দুগ্ধের ভারে হয় মুশকিল হাঁটা,
দুইবেলা চার পোয়া দুধ দেয় পাঁঠা!
খেতে সুস্বাদু নাকি খাঁটি দুধ তার,
অদ্ভুত এ খবর চাপা থাকে আর ?
আজগুবি কাণ্ড এ গরীবের ঘরে,
বানের জলের মত ছড়িয়ে তা পড়ে।

আশপাশ থেকে কত ছেলে-বুড়ো-নারী,
রোজ রোজ ছুটে আসে দালালের বাড়ি।
গাছ তলে পাঁঠা বেঁধে দুধ দোয় তারা,
অবাক নয়নে সেটা চেয়ে দেখে পাড়া!
গাইবান্ধার এক অজপাড়াগাঁয়,
আল্লার লীলা হেরি মাথা ঘুরে যায়!
ফিরবার কালে তারা জনে জনে কয়,
“পাঁঠা দুদ দেচ্ছে রে কতা মিছে নয়!
কাজ কাম থুয়ে তুরা হগ্গলে মিলে,
একবার দেহি আয় আল্লার লীলে!”

থামছে না আল্লার এই লীলাখেলা,
রোজ রোজ মিঁয়াবাড়ি বসে যায় মেলা!
হিন্দু মুসলমান একসাথে কয়,
“মনিরুল,এ পাডা তো যে সে পাডা নয়!
এ পাডার দুধে মেটে চাহিদাটা নিজ,
টাকা নিয়ে দেচ্ছে সে বকরীর বীজও!
আমাগে তো মোনে অয় দুনিয়ায় ‘পরে,
এ পাডাই আল্লার তোফা তোর তরে!
বেচে টেচে দিস নে রে বেশি পালি টাকা,
পাডা তোর ঘুরাবেই ভাগ্যের চাকা!”

মিছে নয় মিডিয়ার কল্যাণে শেষে,
পরিচিতি পেল মিঁয়া আপনার দেশে।
দেশ ছেড়ে বিদেশেও পাড়াগাঁর মিঁয়া,
সাড়া ফেলে দিয়েছে এ মাদি পাঁঠা নিয়া!
জীব বিজ্ঞানীরাও আসে দলে দলে,
অদ্ভুত পাঁঠা লয়ে গবেষণা চলে!
পাঁঠা তরে গর্বিত মিঁয়া ভাবে তাই,
চড়া দামে কচি পাঁঠা কিনে ঠকে নাই।
ইতিহাস গড়ে ফেলা এ পাঁঠার দুধ,
সত্যিই দেশ জাতি করে দিল বুঁদ!
মঙ্গলবাড়ি
০৮.০৯.২২

——————————————–

মন ভালো নেই
——————তাহমিনা চৌধুরী

আকাশ বলে, মন ভালো নেই
তাইতো কাঁদি সারাক্ষণ,
বৃষ্টিরও যে মন ভালো নেই
তাইতো ঝরে যখন তখন।

পবন বলে, মন ভালো নেই
তাই যে উড়ি টালমাটাল,
ঝড় বলে, মন ভালো নেই
তাইতো কাটি ঘুড়ির চাল।

নদী বলে, মন ভালো নেই
তাইতো স্রোতে নেই যে তাল,
সাগর বলে, মন ভালো নেই
তাই ডাকিনি নদীরে কাল।

পাহাড় বলে, মন ভালো নেই
ঝর্ণা হয়ে অশ্রু ঝরে,
বৃক্ষেরও যে মন ভালো নেই
তাইতো শুকনো পাতা ঝরে।

ফুলেরও যে মন ভালো নেই
তাইতো কুড়ি ফুটে নাতো,
কোকিলের মন খারাপে
গান হয় না আগের মতো।

রাধারও যে মন ভালো নেই
কৃষ্ণের বাঁশিতে নেই সেই সুর,
কৃষ্ণের মনে বড়ই যাতনা
রাধার পায়ে বাজে না নুপুর।

কবিরও যে মন ভালো নেই
শব্দ, ছন্দ আসে না কাছে,
আমার যে মন ভালো নেই
সখা তুমি নেই যে পাশে।

কারোরই মন ভালো নেই
তবে কি ভুবন বিষাদময়,
হৃদয়ের বন্ধন ভেঙে গেলে
তাইতো মনে কষ্ট হয়।

Powered by themekiller.com