Breaking News
Home / Breaking News / কবি সোহিনী ঘোষ এর ” পরকীয়া সম্পর্ক”

কবি সোহিনী ঘোষ এর ” পরকীয়া সম্পর্ক”

“পরকীয়া সম্পর্ক”
লেখিকা সোহিনী ঘোষ
সম্পাদনা নির্মলেন্দু নন্দী

আজকাল নাকি পরকীয়া বৈধ। কত ধুমধাম করে কত টাকা খরচ করে বিয়ে হচ্ছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই শুরু হয় অশান্তি। যে বর-কনে বিয়ের আগে একে অপরকে ছেড়ে এক মূহুর্ত থাকতে পারতো না, সারাদিন ফোনে সময় কাটাতো একে অপরের সাথে কথা বলে। সে প্রেমিক প্রেমিকা এখন সংসার করছে, কাছাকাছি থাকার সুযোগ পাচ্ছে, সব বাধা কাটিয়ে খুব কাছে আসতে পারছে ঠিক সেই সময় একে অপরের প্রতি কেন এত অবহেলা বাড়ছে ?

এবার বলি প্রেমিক প্রেমিকা তাদের যে সময়টা প্রেম করে, ফোনে বা চ্যাট করে কাটিয়েছে সেই সময় তারা ছিল মুখোশের আড়ালে ভালোবাসাও ছিল মুখোশ পড়া। তারা ভেবেছে এটাই সত্যিকারের তারা নিজেরা।
কিন্তু বিয়ের পর যখন সব বাধা কাটিয়ে একে অপরের হলো তখন ধীরে ধীরে মুখোশের আড়াল থেকে আসল মুখটা বেড়িয়ে আসতে থাকলো। নিজেরাই নিজেদের বড় অচেনা লাগতে থাকে। যে মানুষটাকে এত ভালোবাসত বলে তারা ভেবেছিল আরও ভেবেছিল একে অপরকে ছাড়া বেঁচে থাকা ব্যর্থ সেই মানুষগুলো অচেনা হয়ে উঠতে থাকে। যে খুঁতগুলো তারা দূরে থাকাকালীন বা প্রেম করার সময় ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়েছিল সংসারের পরিস্থিতিতে তা ক্রমশ বেড়িয়ে আসতে থাকে। কারণ প্রেমে কিছুটা সময় হলেও তারা দূরে থেকেছে। সেই সময় মুখোশের আড়ালে থাকা মানুষ হয়ে বেঁচেছে।

একসাথে রাত কাটালে মানুষকে চেনা খুব সহজ হয়ে যায়। তার সবটুকু না হলেও অনেকটা সামনে চলে আসে। তখনি শুরু হয় মতবিরোধ। একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বিশ্বাস হারাতে শুরু করে একটু করে।
আজকালকার যুগে স্মার্টফোন এ অভ্যস্ত আমরা সহজেই একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। স্বামী স্ত্রী আজকাল একটুতেই অস্থির হয়ে পড়ে।
ধৈর্য কম, বিশ্বাস কম, ভরসা কম। আর এই সুযোগটা নিয়ে নেয় অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি।

এই তৃতীয় ব্যক্তি সে মেয়ে হোক আর ছেলে খুব সহজেই ঢুকে পড়তে পারে। সেই ফাঁকটাতে , যে ফাঁকটা তৈরি হয়ে আছে স্বামী স্ত্রী র মধ্যে। সেই মানুষটিকে যত ভালোবেসে বিয়ে করা হয় একসাথে সারাজীবন কাটানোর মন্ত্র পড়ে অগ্নিসাক্ষী করে মালাবদল করে সারাজীবন একে অপরের সুখদুঃখের অংশীদার হবে বলে। তারাই এক লহমায় কেমন একে অপরের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। যেন সেই ভালোবাসা তাদের কাছে অসহ্য মনে হয়। তখনই ঐ তৃতীয় ব্যক্তি মানুষটাই তাদের কাছে সব। তার প্রতি ভালোবাসার গভীর টান শুরু হতে থাকে। এবার শুরু হয় নতুন প্রেম। ঘরের মানুষ যাকে এত ভালোবাসা হত তাকে ভুলে ঘৃণা করে অবিশ্বাস করে দূরে সরিয়ে রেখে আজ ভালো থাকার জন্য খুঁজে নেয় অন্য পন্থা। ধীরে ধীরে সরতে থাকে সংসার থেকে আর জড়িয়ে পড়ে মিথ্যে ভালোবাসায়। সেটাও যে একটা মুখোশের আড়ালে সেটা বোঝার ক্ষমতা তার তখন থাকে না। সবকিছু ভালোবাসা তখন সেখানে। শুরু হয় পরকীয়া। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করার নেই। কারণ আজ পরকীয়া বৈধ। এই জন্য কত জীবন যে নষ্ট হচ্ছে তা যদি বোঝা যেত। চকচকে জিনিসের প্রতি আগ্রহ আর নতুন জিনিসের প্রতি ভালোলাগা ও তার প্রতি কদর মানুষের চিরকালের। পুরোনো যা কিছু তা আর ভালো লাগে না। এই প্রেম বিয়ে বড্ড একঘেয়ে মনে হয়। কারণ নতুন কেউ এসেছে জীবনে যা বড্ড চকচকে। কিন্তু এই চকচকে জিনিসটাও চকচকে থাকবে না। যদি এই পরকীয়া বিয়েতে পরিণত হয়। কারণ এই সম্পর্কও সেই একই ভাবে মুখোশধারী।

Powered by themekiller.com