কবিতাঃ “উইপোকার বসতি”
কলমেঃ সাংবাদিক এম. আর হারুন
————————–
কয়েক বছর হলো
পুরনো বই গুলো আর খোলা হয়না,
বইয়ের ভেতর ভাঁজে ভাঁজে
অগনিত প্রেমের চিঠি,
গোলাপের পাপড়ি গুলো শুকিয়
ধুসর রঙে পরিনত,
পলি জমা বই গুলো পরিস্কার করতেই
ভাঁজ করা নীল খাম বেরিয়ে আসে,
হতবাক হয়ে চেয়ে থাকি।
চিঠির ভাঁজ ঠিকই আছে
কিন্তু উইপোকার বসত,
সুন্দর হাতের লেখা চিঠি গুলো
অসম্ভব হয়ে পড়েচে পড়া,
মনের ভেতর কে যেনো আঁচড় আঁকে
এখন আর তখন, সময়ের ব্যবধানে
অনেক পার্থক্য,
মুঠোফোনে কথা হয় দিবানিশী
ডাক পিয়ন সাইকেল চালিয়ে আসেনা,
হস্তলেখায় এখন আর প্রেমের ছন্দ গুলো
নির্মম হয়ে বকে গেছে।
ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে
সেই পুরনো দিন গুলোর মাঝে
স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা,
প্রিয়তমা ফিরে আসবে এ পথ দিয়েই,
স্কুলের দপ্তরী কখন ছুটির ঘন্টা দেবে
হাত ঘরিটির দিকে বার বার দেখা।
ঘরের ভেতর বস্তাবন্দি বই গুলোকে
যত্ন করে রেখেছিলাম
কত বছর পার হয়ে গেলো,
যান্ত্রিকতার কষাঘাতে চিঠি গুলোর কথা
একবারও মনে পড়ে না,
এখন আর সাদা কাগজে কালো কালিতে
চিঠি লিখতে হয়না,
সময়ের বির্বতনে হারিয়ে গেছে
ফুল তোলা রূমাল উপহার,
এক সময়ে এটি ছিলো প্রেমের নিদর্শন
তবুও যাবেনা ফেরা।
চিঠি গুলো উইপোকা এমনভাবে কেটেছে
প্রতিটি শব্দ যেনো অগোছলো,
উইপোকার এ বসত ঘরটি থাকবে আর ক’দিন,
মনের দিক থেকে কষ্টের আবরন,
বিবর্নতায় আঁকাবাঁকা পথে হোঁচট খেয়ে
দাড়ানোর শক্তিও নেই।
উইপোকা তোমাকে আগলে রাখলাম
আমার হৃদয়ের অভ্যান্তরে,
যুগ যুগান্তরের অব্যক্ত আশা নিয়ে
প্রেমের প্রলেপ মেখে দু’চোখে।