অনলাইন ডেস্কঃ
তিস্তা উত্তাল হয়ে উঠেছে উজান থেকে আসা ঢলে। এতে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে দুই ইউনিয়নে প্রায় ছয় হাজার পরিবার। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ১৭ পরিবারের ঘরবাড়ি। তিস্তাপারে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে, আতঙ্কে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে লোকজন। জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে ভারতের ১১ জেলায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। পানি ধরে রাখতে না পেরে তিস্তার উৎস মুখ খুলে দেওয়া হয় গজলডোবা ব্যারাজের গেট। বুধবার দুপুরে তিস্তার অসংরক্ষিত ৪০ কিলোমিটার এলাকায় জারি করা হয় লাল সংকেত। তিস্তা নদীর দোমহনী থেকে এদেশিয় ভূখন্ড পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটারে জারি থাকে হলুদ সংকেত। নদীতে পানি ছাড়া হয় এক লাখ ২৭ হাজার কিউসেক। এই পানি মাত্র ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হওয়ায় রূপ নেয় বন্যায়। যদিও আজ শুক্রবার দুপুরে গজলডোবা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ তাদের লাল ও হলুদ সংকেত তুলে নেয়। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানের ঢলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করে। তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। রাত ৯টার দিকে ওই পয়েন্ট বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে ব্যারাজের সবকটি গেট খুলে দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও দুপুরে তা বিপৎসীমা পর্যন্ত নেমে আসে। গঙ্গাচড়ার বিনবিনা এলাকায় একটি বেড়িবাঁধ ছিল। গত বছর বন্যায় তা ভেঙে তিস্তার স্রোতে গতি পরিবর্তন করে। এতে বন্যা ও ভাঙনের শিকার হয় কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে কোন সমাধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে চলতি বছর কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় তারা স্বেচ্ছাশ্রমে ৫০০ মিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করে। লক্ষীটারী কেল্লারপার চরেও স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। যাতে তিস্তার মূল গতিপথ শেখ হাসিনা গঙ্গাচড়া সেতুর নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু ওই বাঁধ ভেঙে এবারও তিস্তা ভিন্ন পথে চলতে শুরু করেছে।