স্পর্শ
– রাইনা রহমান
এ এক অন্যরকম অনুভূতি
সে এক অদ্ভুত শিহরণ!
যেনো ফজরের আজান শুনে,
আরমোড়া ভেঙে সদ্য জাগরণ।
আঙুলে আঙুল ছুঁতে চায়
হাতের উপর হাতের পরশ উঠে যায়;
একটু আলতো সংস্পর্শে
কেঁপে ওঠে অন্তরাত্মা,
জাগে শরীরের সহস্র লোমকূপ।
লজ্জাবতীর মতো বালিকা কিশোরী
স্পর্শমাত্র হয় যুবতি ঝিয়ারী।
সেই প্রথম হাত ধরা
শুরু হয় একসাথে পথ চলা
বিস্তীর্ণ আকাশে ওড়ে
একজোড়া কপোত-কপোতী।
যেনো শেষ রাতের স্বপ্নের মতো
ঘুম ভেঙে যায়, রয়ে যায় স্বপ্নের রেশ!
চোখ বুজলেই অনুভূত হয়
শীতল সে আবেশ।
শরতের সকালে শিউলি কুড়াতে এসে
শিশিরে ভেজে যে নগ্ন পা
অভিসারে গিয়েছে বলে তারে অপবাদ দিও না।
উত্তরের হাওয়ায়
থুরথুরে বুড়ি কাঁপছে যেমন
প্রথম ছোঁয়ায় লাগে তেমন কাঁপন।
পৌষের শেষে
জল ফড়িং এর দেশে,
ধানের ক্ষেতে আল্ পথ ধরে
হাতে হাত রেখে হেঁটে যায় ওরা
দূর হতে দূরে, বহু দূরে।
অস্তপাড়ে দিগন্ত মেলে যেথায়
আকাশের দিক বলয় স্পর্শ করে সমুদ্র সেথায়।
——————————————-
পরম পাওয়াটুকুন অনুভবেই থাক
নাকিবা মৌরী
তারিখঃ১৯/১২/২০২২
জীবন তরঙ্গের ঠিক শীর্ষচূড়ায় পেয়েছি তোমাকে
অগণিত ঢেউ অবিরাম ফেনিল বুদবুদে ভরে যায় হৃদয়ের তট
সকাল-দুপুর বিকাল-সন্ধ্যা
তোমার এক পলক শীতল ছোঁয়ায় কুড়াই জীবনের স্পন্দন।
আমার ভালোবাসার সমস্ত অনুভূতিতে তোমার বিচরণ
চৈত্রের খরতাপে চৌচির ভূমির তৃষিত আর্তনাদে তুমি থাকো
বৈশাখের তাণ্ডব শেষে এক পশলা বৃষ্টির
সুখ হয়ে আসো জীবনে আমার।
তোমার ভালোবাসায় খুঁজি আমার জীবনের সকল বসন্ত অনুভব
অধীর আকাঙ্খায় প্রতীক্ষায় থাকি
মেঘভাঙা আষাঢ়ের সুখ বরষার
ভেসে যাওয়ার চরম অপেক্ষায় দিন গোনে
আমার নীল নীল ভালোবাসার় চোখ
প্রত্যশায় তোমার হৃদয়ের এক টুকরো বাঁধভাঙা ভালোবাসায়
হারিয়ে যেতে পারি আমি অনেকটা পথ প্রতিদিন।
তুমি শুধু বেহাত সুর তুলে ভেসে থেকো
জ্যোৎস্না লুকিয়ে থেকোনা অমাবস্যার কালো আঁধারে ।
রক্তের সম্বোধনকে অস্বীকার করতে দ্বিধা নেই যার সেও কখনো কখনো আপন করে নেয় পথের মানুষকে,
হৃদয় ভাঙা একপথিক আমি করুণা করে হলেও
দিও আমাকে এক ফালি চাঁদের জ্যোৎস্না
এটাই হবে আমার পরম পাওয়া।
——————————————–
কবিতা ঃ বিজয় মানে কি?
কলমে ঃ শায়লা আহমেদ।
তারিখ ঃ ১৯.১২.২০২২
বলোনা, বিজয় মানে কি?
জানা আছে কি কারো তা?
বিজয় মানে মায়ের আঁচল
যেথা আছে, স্নেহ, মমতা।
বিজয় মানে নয় হতাশা
দুঃখ ভুলে হাসা,
বিজয় মানে মায়ের বুলি
আমার বাংলা ভাষা।
বিজয় মানে নতুন সূর্য
সোনালী আকাশ,
বিজয় মানে পূর্নিমার চাঁদ
সুখ, আনন্দে বসবাস !
বিজয় মানে নয় আর
একনায়ক শাসন,
বিজয় মানে শান্তি সুখ
গরীব ধনীর সম আসন !
বিজয় মানে ভালবাসা
নেই ধর্ষন, হত্যা ভীতি,
বিজয় মানে চলতি পথে
নির্ভীক নির্ভয় রীতি।
বিজয় মানে নেই আর্তনাদ
নেই ক্ষুধার জ্বালা,
বিজয় মানে সবাই সমান
নয়তো কারো অবহেলা।
——————————————-
বিভাগ – কবিতা
শিরোনাম – ভাবনা
কলমে – মানস দেব
তারিখ – ১৯/১২/২২
ভাবো… ভাবো… ভাবো…
একটু বেশি করে ভাবো ।
ভাবাটা অভ্যেস করে ফেলো ।
আজকের ভাবনা
আগামীর পথ কে করবে প্রশস্ত ।
ভাবনার বহরটা সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর করো ।
সমাধান যে সেখানেই লুকিয়ে ।
আজ ভাববার মতো মানুষ কই ?
মানুষ থাকলেও
সময় কই ?
পদে পদে বেফাঁস কথা ।
সমালোচনা আর তর্ক – বিতর্কের আখড়া !
ভাবুক মানুষের বড্ড অভাব!
——————————————–
সুভাষ রঞ্জন রায় ।২৬৩
উষ্ণতা ।
২৫|১২|২২
পুণপোষ্ট ১৮|১২।২২
পৌষের এই হিম শীতল রাতের ঘুম ভাঙা সুনসান চতুর্থ প্রহরে ,
তাপমাত্রা যখন ব্যারুমিটারের আট নয়ে ঘুরাঘুরি করে।
শীত বস্ত্র সমূহ যখন শীত নিবারণ করিতে বারবার ব্যর্থ,
প্রকৃতির রুদ্ররূপ অসহনীয় ভাব নিয়ে এই জনারনণ্যের চারিদিকে মূর্ত।
সুনসান নিরবতায় শীতার্ত রাত জাগা খেচরের আর্তনাদ ,
অসহায় মৌনী বৃক্ষরাজির পাতা বেয়ে টিপটিপ উষাপাত।
দেয়ালে ঝুলে থাকা সময় নির্ধারণীর ঢং ঢং হুশিয়ার,
পাশের কক্ষে ঘুমন্ত পিতার নাসিকার গুরু গম্ভীর শব্দসম্ভার।
পড়শির ঘরে শীতে নবজাতকের সুতীব্র করুন চিৎকার,
উষ্ণতার আশায় মায়ের বুকে পড়ে কাঁদে কেবল বারংবার।
দূরে কোন বৈষ্ণব যুগলের করুণ প্রেমময় বাউল গান,
প্রচন্ড শীতে অসহায় জীব প্রকৃতি চারিদিকে নিষ্প্রান।
লেপ কম্বল মুড়ি দিয়ে দেহমন উষ্ণতার পরশ আর আমেজ নিতে ,
মাথা গুজে দেওয়া নিবিড় হয়ে দয়িতের দেহের গিরিখাতে ।
একটু উষ্ণতা দাও; ভালবাসার অমোঘ চরম পরমশান্তির উষ্ণতা,
মদির শ্বাসপ্রশ্বাস ছাড়া থাক বাকী সব সুনসান নীরবতা।
তোমার মোহনীয় একটু উষ্ণতায় নব সৃষ্টির আড়ালের কুঁড়ি,
সম্ভাবনায় সৌরভিত হয়ে প্রস্ফুটিত হবে নব জীবন স্মরি।
——————————————–
শিরোনাম–“”মধ্যরাতের কবি””
কলমে–জয়া গোস্বামী
১৯-১২-২০২২
আমি যে মধ্যরাতের কবি শুধু লিখি আর মুছি,
সে আসে জানি রাতের আঁধারে চুপিচুপি বুঝি?
ভালোবাসার আলিঙ্গনে জীবনের গল্প লিখি,
আমার লেখাতে বাস্তবের কিছু রূপ দিয়ে থাকি।
কী থাকে বলো মধ্যরাতের কবির ভাবনার কাগজে,
কেউ বোঝে না প্রেমের কাব্য ছাড়া নেই আমার মগজে।
কিছু গল্প,কিছু স্মৃতি,কিছু বাস্তবতার থাকে সারাংশ,
রাতের আঁধারে ঘটে যাওয়া কিছু স্মৃতির শেষাংশ।
কবিতার ছন্দের ছন্দ পতন ঘটলে দাঁড়াতে হয় কাঠগড়ায়,
জীবনের আলেখ্য এসে হারিয়ে যায়, স্মৃতির দোরগোড়ায়।
এসে ,মধ্যরাতের কবির কবিতা থাকে লেখা কিছু অসমাপ্ত ,
ভালোবাসার সুখ কী রকম সেটাই লেখা কবিতাতে করি সমাপ্ত।
জীবনের গল্প যে গল্প জানে না কেউ শুধুই লিখি এক মনে,
যেটা লিখে রাখি মধ্যরাতে তীব্র যন্ত্রণার কথা খাতার এক কোণে।
তবুও লিখি নিত্য নির্মাণ করি নিজের অন্তর দিয়ে পাতায়,
জানি কিছু ভুল কিছু মনগড়া গল্প থাকে আমার কবিতায়।
হয়ত ভালো কেউ বলে না বুঝি, তবু লেখাতে দেখাই ভীষণ ব্যস্ত,
জানি মধ্যরাতের প্রেমের কাব্য ভাবুক মনের কথায় যায় অস্ত।
এই কবিতা লিখে , হয়ত যোগ্য সম্মান কোনদিন পাবো না,
তবু হৃদয় লুঠের গল্প কবিতাতে না লিখলেও আবার হয় না।
আমার যে লেখা আসে নিশুতিরাতে তারার হাত ধরে,
তাই তো হলাম প্রেমের কাণ্ডারি তোমার মনের বিজন ঘরে।
——————————————-