নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের গাজী বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য গাজী মোঃ ওসমান গনির স্ত্রী নুরজাহান আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী নারীর করুণ দুঃখ দুর্দশার কথা এ প্রতিনিধিকে জানান এবং আদালত থেকে কচুয়া থানায় প্রেরনকৃত মামলার সুষ্ঠ তদন্তের দাবী করেন। নুরজাহান আক্তার জানান, গত মাসের ২২ এপ্রিল দুপুর পোনে ১টার দিকে সম্পত্তির বিরোধে একই বাড়ির বর্ডারগার্ড (বিজিবি) সদস্য গাজী মোঃ হানিফ (৪৮) ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমাদের বসত ঘর বাড়ির সীমানায় এসে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে শরীলের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম সহ শীলতাহানি করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে হানিফ চাপাতি দিয়ে মাথায় আগাত করার চেষ্টা করলে আমি হাত উচু করে প্রতিহত করতে গেলে আমার বামহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও শাহাদাত আঙ্গুলের মাঝখানে কোপ পড়ে মারাক্তক রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় আমার স্বামী আমাকে রক্ষা করতে আসলে তাদের পরিবারের সকলে তাকেও এলোপাতাড়ি মরধর সহ শরীলের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে। এমতাবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের চরম নির্যাতনের কবল থেকে আমাদেরকে সহযোগিতা করে এবং আমি ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে কচুয়া থানার এসআই সাগর সেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনার স্থলে এসে আমাদেরকে রক্তাক্ত আহত দেখতে পেয়ে তিনি চিকিৎসা নেয়ার জন্য হাসপাতালে যাওয়ার কথা বললে আমরা বিকেল ৪টা ৪০ মিঃ সময়ে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বামী ওসমান গনিকে ভর্তি করাই এবং জরুরী বিভাগে আমার হাতের আঙ্গুলের গোড়ায় ৭ টি শেলাইয়ের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নেই।
নুরজাহান আরো জানান, আমাদের উপর হামলার সময় তাদেরই আঘাতে হানিফের ছেলে তানভীর (২১) আহত হয় এবং একই হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে আমাদের স্বামী-স্ত্রী দু’জনের নামে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করে। আমার স্বামী ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার মাত্র আধাঘন্টার মধ্যে তাদের মামলার এসআই মোহাম্মদ আরিফুর রহমান হাসপাতালে এসে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক হাসপাতাল থেকে আহত অবস্থায় স্বামীর ছাড়পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে তাকেসহ আমার ছোট ভাই শাহরিয়ার শাওন (১৭) কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দুঃখের কথা আর কি বলবো তখন বহু হয়রানীর শিকার হয়েছি এবং পরেরদিন (২৩ এপ্রিল) আমার ছোট ভাই শাওনকে ছেড়ে দিয়ে আহত স্বামীকে কোর্টে চালান করে দেয়। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেল হাজতে রয়েছে। পরে নুরজাহান আক্তার কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে গাজী হানিফকে প্রদান বিবাদী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ কচুয়া-চাঁদপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত তদন্তের জন্য মামলাটি কচুয়া থানায় প্রেরণ করে। যাহার মামলা নং- সি আর ১৯৭/২০২২ ইং।
এদিকে হানিফ গংদের পক্ষে তার নিকট আত্মীয় শাহরাস্তি উপজেলার টামটা গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে মোহাম্মদ উল্যা (৪২) বাদী হয়ে কচুয়ায় থানায় এজহার দায়ের করে। এজহারে প্রকাশ বিবাদী ওসমান গনি গংদের সাথে পূর্ব থেকে সম্পত্তি ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আমার ভগ্নিপতি গাজী মো: হানিফ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) তে কর্মরত আছে। পূর্বের বিরোধের জের ধরে আমার বোন ভাগিনা ও ভগ্নিপতির উপর অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন জুলুম করে আসছে। আমার ভগ্নিপতি গাজী হানিফ ছুটিতে বাড়িতে আসলে গত ২২/০৪/২০২২ইং তারিখে দুপুর অনুমান পৌনে ১ টার সময় আমার বোন রাহেলা বেগম তাদের বসত ঘরের সামনে উঠানে লাকড়ি রাখা কালে বিবাদীরা পূর্বের বিরোধের জের ধরে বে-আইনি জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে অনধিকার ভাবে আমার বোনের বসত ঘরের সামনে এসে বোনকে বাঁধা প্রদান সহ তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে আমার বোন রাহেলা বেগমকে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে কিল-ঘুষি লাথি মেরে তার শরীলের বিভিন্ন স্থানে নিলা ফুলা জখম সহ শালতাহানি করে। বিবাদীদের কবল হতে বোনকে রক্ষা করার জন্য ভাগিনা তানভীর আহেম্মদ এগিয়ে গেলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য ভাগিনার মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারিলে ভাগিনা মাথা সরিয়ে ফেললে তার নাকের ডানে এবং গালের ডান পাশের উপর কোপ পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় আমার বোন ভাগিনার ডাক-চিৎকারে আস-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে দেখে তারা স্থান ত্যাগ করে চলে যায় এবং ভাগিনাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তার অবস্থার অবনিত দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক হাসপাতালে ছুটে এসে ঘটনার বিস্তারিত শুনে থানায় গিয়ে এ এজহার দায়ের করি। যাহার মামলা নং-২৭। তারিখ ২২/০৪/২০২২ইং।
হানিফ গংদের মামলার তদন্ত অফিসার এসআই মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে ওসমান গনিকে জোরপূর্বক ছাড়পত্রে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়ে নুরজাহানের কথাটি সত্য নয়।
কচুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মহিউদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করে বলেন, কোর্ট থেকে বাদী নুরজাহানের মামলাটি তদন্তের জন্য থানায় পাঠানো হলে আমি নিজেই মামলাটির তদন্তের ভার নেই এবং তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভাবে উভয়ের মামলা তদন্তের জন্য নুরজাহান আক্তার কচুয়া থানা পুলিশের নিকট বিনয় প্রার্থনার দাবী করেছেন।