অনলাইন নিউজঃ
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রমজান মাসকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্য নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন দেশের একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। এক্ষেত্রে বিশ্ববাজারের মূল্যবৃদ্ধির হারকেও ছাপিয়ে গেছেন তারা। শুধু তাই নয়, শিগগিরই বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে-এমন ইঙ্গিতও দেওয়া হচ্ছে ওই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
সূত্র জানায়, বিগত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে গমসহ কয়েকটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে। কিন্তু বিশ্ববাজারের তুলনায় দেশে ওইসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। অথচ এগুলো বেশ আগেই আমদানি করা হয়েছিল। অসাধুদের আমন কারসাজিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির হার এবং দেশে বাড়ানোর হার, পণ্যের আমদানি ও মজুদ পরিস্থিতি বৈঠকে বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের একটি বার্তা দেওয়া হবে। যাতে অযৌক্তিক মুনাফা না করে। পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়ে সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে ওই বৈঠকে।
জানা গেছে, বাজার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, রোজার আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হবে না। সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। তাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করার অনুরোধ করেছি। বিশ্ববাজারে যদি বাড়েও অনুরোধ করব সেটা সহ্য করার জন্য।
অপরদিকে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন আসন্ন রমজানে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। রোজায় শাকসবজির দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমাদের সবজির যে উৎপাদন হয়েছে, তাতে রোজায় পণ্যের দাম বাড়বে না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মন্ত্রীদের এমন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন পুরোটাই নির্ভর করছে ব্যবসায়ীদের ওপর। কারণ ইতোমধ্যে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা বিশ্ববাজার থেকে দেশের ভেতর বেশি বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা মুন্ডির হিসাবে গত এক মাসে বিশ্ববাজারে চিনির মূল্য প্রতি মেট্রিক টনে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে। বিপরীতে টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে দেশীয় বাজারে চিনির মূল্য বেড়েছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। একইভাবে পামঅয়েলের মূল্য গত এক মাসে বিশ্ববাজারে বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বিপরীতে দেশের বাজারে বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। সয়াবিনের মূল্য বিশ্ববাজারে বেড়েছে ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ, বিপরীতে দেশের বাজারে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।