Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের সেরা চার সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের সেরা চার সাহিত্য

একুশে তোমাকে
দেবাশিস চক্রবর্তী

প্রতিবার তোমার বন্দুক
আর আমার বাংলার দেখা হয়!
কুয়াশায় পাড়ার পুকুরে
দুলে ওঠে ছায়া!
দেখি স্বরবর্ণের হাত
ধরে হাঁটছে সালেম,
ব্যাজ্ঞণ বর্ণকে বুকে জড়িয়ে
তুলছে মাথা জব্বর।
আমার মায়ের বোবা
কান্নায় অনন্ত শব্দ,
গভীর তৃষ্ণায় দেখেছি
প্রিয় নারীর খোঁপায়
বাংলার ফুল !
বাংলার আটপৌরে
হাঁসের শরীর থেকে
ঝড়ে পড়ে অবহমান
কালের সীমাহীন সব বেদনা।
ফেব্রুয়ারির সাদা জলে
হয়তো কোনও নামহীন
মাছ খোঁজে তোমার
আমার গপ্পো, প্রত্যেক
মায়ের ভাষার গল্প !
বুলেটের স্পর্ধাকে ভেঙ্গে
আমরা তখন হাঁটি,
আমার একুশে
আমর একুশে
এগিয়ে যায় অফ্রিকার
কোনও গ্রামেরই দিকে
আমার একুশে ফেব্রুয়ারি
যায় হেঁটে সাঁওতাল
কোনও অচেনা গ্রামের দিকে।

——————————————-
বিষয় : কবিতা।
শিরোনাম : দিনান্তের ক্যানভাসে স্মৃতি।
কলমে : মোঃ এ এম এ এস জীবন।
দিনাংঙ্ক : ২২/০২/২০২২ ইং

💕”শীতের হাওয়া বারান্দা পেরিয়ে
ছড়িয়ে পড়ছে আমার ঘরে।
দিনান্তের অনন্ত ক্লান্তি অফুরান্ত হাসি নিয়ে
বসে আছি ক্যানভাসের সামনে।
শীত আদরের চাদর খানি খসে পড়বে
রাতের মন-কেমনিয়া রূপকথার মতো।

রাতের কুয়াশার মতো ঘিরে ধরবে উষ্ণ মায়া
কিছুতেই ফিরতে পারবে না আনমনা মনকে
এই যে শীতকালীন বৃষ্টি!
এলোমেলো হাওয়া!
আস্তে আস্তে আলো নেমে যাচ্ছে
ঐ দূরের নারিকেল গাছের পাতার আড়ালে।

ঘাসের উপর শিশির হবো নির্মল শৈশব দাও যদি।
আহির ভৈরবে হবো ভোর অস্তিত্বে স্নিগ্ধ হবে নদী
অভিমান তীব্র হলে হবো দহনের আগুন পোড়া রং!
ফাল্গুনের নির্জন দুপুরে হতে পারি মুখরিত গৌর সারং,
দিন অবসানে সান্ধ্য আজানে হবো পবিত্র আলাপন……

ভালবাসা আর বেদনা মিশিয়ে
হবো কী বেহাগ অথবা ইমন……?
তোমার অসমাপ্ত মনে গুঁজে দিতে চাই একটি রং
যা তুমি মুছতে গেলে তোমার মুখ হয়ে ওঠবে রংধনু,
যা নিয়ে তুমি জেগে থাকবে পৃথিবীর পর পৃথিবী,

ছিন্নভিন্ন শতাব্দীর আজন্ম পর্বের ইশারাকুলে
অসমাপ্ত বিশ্বাসের হাজার চমকে……
তুমি জেগে থাকবে আমার দেহের নদীর চলনে।
আমার মনের সুনামিতে নিশিদিন ফাল্গুনী রঙে
ভাবনা গুলো জমে জমে মেলেছে আলোকধারা
স্বপ্নে-ভেজা চোখের পাতা চায় না ছুঁতে আর কিছু!

এক তুমি ছাড়া মেলেছো আলোক ধারা,
ক্ষত গম্ভীর ছায়া আমার বিলাপ-মুছা আঁখিতে
পারি না আমি পারি না তোমাকে সরিয়ে রাখতে……
সম্মুখে-ভরা ভরা-চাহনি আর পিছনে স্থিতিহারা।

বিষণ্ণ নদীর ধারে রাতজাগা চোখ,
থমকে দাঁড়ায় এক কুচি মেঘ,
টুকরো বিশ্বাস নিয়ে অবিশ্বাসী চোখের জল,
আঁজলে ভরে মনে মনে ভাবে
অঝোর বর্ষণে আজ ভাসুক হৃদয়।

সেই মেয়েটা রোজই আসে
সবুজ ঘাসের স্বপ্ন বুনে,
নীলচে আলোর পরত গুনে
লুকিয়ে মাখে মেঘের ফেনা।
রাতের তারার আকাশ দেখে
হাত ছড়িয়ে হাওয়ায় ভেসে,
থমকে দাঁড়ায় ঝড়ের কাছে
পকেট ভরা তারারকুচি।

খুব গরমে রোদকে বকে
বৃষ্টিকে যে আগলে রাখে
ওই মেয়েটা যখন আসে
চাঁদের আলোয় আকাশ ভাসে।
গল্প বলে কথার ফাঁকে
মেঘ পরীদের সঙ্গে ডাকে
তুমিই জানো সেই মেয়েটা
একটু খানি পাগল কি না!

আমিও তাকে লুকিয়ে দেখি
ছাদের মাঝে ঘুরতে থাকি
চোখের তারার মাঝে কি সে
রংধনুকে লুকিয়ে রাখে?
মাঝে মাঝে ভুল করে সে
আবোল তাবোল বকবকে
মনটাকে তার লুকিয়ে রেখে
ছড়িয়ে পড়ে পরাগ মেখে।

রোজ সকালে চুপটি করে
পুব আকাশের জানলা খোলে,
চলতে গিয়ে পথের বাঁকে
থমকে গিয়ে তোমায় খোঁজে।
মেয়েটা বুঝি বড্ড সরল
একটু দস্যি নেইত গরল,
বৃষ্টি হলেই ভিজতে দেখি
ময়না, শালিক সঙ্গে রেখে।

আমি জানি কোথায় থাকে
আমার মনের ঠিক কিনারে
ফুল পরীদের কাপড় পড়ে
আমায় ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে কাছে।
অবাক হয়ে আকাশ দেখে
মনে মনে গুনগুনিয়ে
হাজার তারার আলোর মাঝে
চাঁদের আলোয় স্নান করে সে……

আমাকে তুমি নিয়ে যাও অতদুর,
যেখানে তোমার বুকের কশেরুকার মতো
সাদা রংধনুতে চিকচিকে ডানা তোলে
পাখির সফল বিণ্যাস যেখানে শামুকের
মতো ফুলের নীহারিকায় সাঁতার কাটে
তোমার আমার ছোট্ট কথাটি
কথা দিলাম তোমায়
ভালোবাসি শুধুই তোমাকে……”🌹

——————————————–

[[ স্বরবর্ণ ব্যাঞ্জনবর্ণ ]] || অভিজিৎ দাস ||
– ২১/০২/২২
———————–
একুশের কোনো এক রাতে
অন্য কোন এক মঞ্চে
আবার দেখা হবে,
টলমলে এই শরীরটার অবলম্বন।
এখন আপাতত
তোমার স্মৃতির হাতেই ছেড়ে দিলাম
হলদে মলাটে ভরা সেই সব অলস বিকেল গুলো
শুধু ধূলো বালি ঝেড়ে নিলেই আবার নতুন হবে।

অনিবার্য কিছু নিরিবিলি মুহূর্তের
এখন রইলো পূর্ণচ্ছেদ।
শতাব্দীর শুরুতেই যখন প্রজাপতির
মৃত্যুর দিন ঠিক হয়ে গেছে,
ঠিক হয়ে গেছে অনিবার্য পরিনিতি,
তারপরেও সমস্ত অক্ষরমালাকে
শ্রাবনের জলে বিসর্জন দিয়ে কি লাভ?

এখন আর কোন বিষন্ন গোধূলি নেই,
নেই কোন ‘কৃষ্ণা দ্বাদশীর রাত’।
প্রায় প্রতিনিয়ত বিধ্বস্ত তুমি,
প্রায় সর্বক্ষন ক্ষত বিক্ষত আমি।
এখানে পড়ন্ত বিকেলে সবাই
হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা কে অনুসরণ করেই
পরিত্রান পেতে চায়।
ওদিকে পুরনো স্থাপত্য আর বাড়ির ছাদ গুলো
একটার পর একটা ভেঙে পড়ে আমার প্রিয় বর্ণমলায়
তবুও পূর্ণচ্ছেদ দিইনা কোন উপন্যাসে,
প্রাপ্ত বয়স্কদের এই জগতে প্রাপ্ত মনস্কদের খুঁজছি,
স্বরবর্ণে না, ভরসা রেখেছি ব্যাঞ্জণবর্ণে।

——————————————–

পোড়া কংকাল/মাহমুদ নজরুল

সন্তানের চাহিদা মাফিক বিরিয়ানি কিনতে এসেছিলাম
প্রসিদ্ধ পুরোনো সেই ঢাকার বিরিয়ানি,
বহুদিন খায়নি বলে আবদার জুড়েছিল
বাবা হয়ে মিটাতে না পেরে
কষ্টে কাটিয়েছি রাত।
টেবিলে বসিয়ে রেখে বলেছি–
আমি নিয়ে আসছি
অপেক্ষার হাত ধুয়ে বসে পড়—
জানিনা সে এখনো বসে আছে কি না।
বিরিয়ানি কিনে দাঁড়িয়ে রয়েছি অনন্তকাল
চকবাজারেরর মোড়ে অসহায় পিতা
অগ্নিদগ্ধ পোড়া কংকাল।

——————————————-

Powered by themekiller.com