“যুগল পথিক”
– রিটন মোস্তফা
তখনও সন্ধ্যা নামেনি, আঁধার হয়নি
আকাশে গাঢ় বেগুনি রঙের আভা
থির থির করে কাঁপছে লতা ও পাতা
নদী চরে নেমে এলো যেন রাজ্যের জ্বর
তুমি তখনও ফেরোনি ঘরে, দৃষ্টির পথে আমি।
বেলা শেষের ছাপ তোমার কপলে
কাঁপছে ঠোঁট, কাঁপছে দুরু দুরু বুক
সংকোচে আড়ষ্ঠ ভীরু পা দুটো তোমার
বাতাসে মৃদু উড়ছে অবাধ্য চুল
তোমার ধাপ পড়ল আমার এদিকে, লাজুক কেঁপে।
অন্ধকার নামার আগেই নামলো আবেগ
তোমার প্রতিটি ধাপে আমি উদ্বিগ্ন, উদগ্রীব
নদীর জলে চৈতি ঢেউ,বাতাসে স্নিগ্ধ আবেস,
অবাক বিশ্ময়ে তাকিয়ে আছে নিশ্চুপ প্রকৃতি
তুমি আরও কিছু ধাপ এগিয়ে এলে এদিকে।
আমি বহুকাল হলো এক অপেক্ষার চাতক
এই নদী ও তুমি নারী- আমার পিপাসার ইন্ধন
আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে নদীর পটভূমি
আমার সমস্ত কবিতার প্রতিটি শব্দে “তুমি নারী”
তোমার অপেক্ষা, নদীর টান,এটাই আমার জীবন।
শেষ ধাপে কাছে এলে অনাদিকালের বাঁধ ভেঙে
চঞ্চল হলো নদী, শোরগোল পাখিদের দলে
বাতাসে ভেসে এল আবেগি বাসনার আহ্বান,
কাঁপা কাঁপা হাতে যেই ধরলে আমার হাত
অমনি প্রকৃতির বুকে স্তব্ধ হলো সমস্ত কষ্ট, দুঃখ।
নদীর পার ঘেঁসে এখন আমরা যুগল পথিক
এখন নদী ও নারী দুটোই আমার, কবিতা তোমার
এখন পৃথিবীর পথে চারটি ধাপে চারটি পদচিহ্ন,
চারটি চোখে চিরঞ্জীব হবে পৃথিবীর বনাঞ্চল
এখন দুটোই আমার, তুমি ও নদী, নদী ও নারী।