Breaking News
Home / Breaking News / এমপি হয়ে খালেদা জিয়াকে ভুলে গেছেন সুলতান মনসুর!

এমপি হয়ে খালেদা জিয়াকে ভুলে গেছেন সুলতান মনসুর!

অনলাইন নিউজঃ
আলোচিত-সমালোচিত, আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়া সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদকে তুলাধোনা করলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুফিয়ান আহমেদ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপি নেতা সুফিয়ানই ছিলেন সুলতান মনসুরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সমন্বয়কারী। আর এখন সুফিয়ান আহমেদের ‘চোখের বিষ’ সংসদ সদস্য (এমপি) সুলতান।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে সুলতান মনসুর ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মন জয় করে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ছিলেন সুলতান মনসুর। অভিযোগ রয়েছে, এমপি হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে ভুলে যান তিনি। ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে এমপি হয়ে বিভিন্ন শুভেচ্ছাবার্তায় খালেদা জিয়ার ছবি ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের ছবি ব্যবহার করে তিনি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন।
এ রকম প্রেক্ষাপটে গত রবিবার স্থানীয় বিএনপি নেতা সুফিয়ান আহমেদ তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে সুলতান মনসুরের ঈদ শুভেচ্ছার একটি ছবি পোস্ট করে তাতে নিজের ক্ষোভের কথা জানান দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি চাউর হলে দেশ ও প্রবাস থেকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ শত শত মানুষ সুলতান মনসুরের প্রতি বিষোদগার করে নানা মন্তব্য করেন।
সুফিয়ান আহমেদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘প্রতারণার শেষ কোথায়…! মনে কষ্ট নিয়েন না, মাফ চেয়ে দু-চারটি কথা বলব এমপি সাহেব। ভোট দিলাম ধানের শীষে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে মাঠে ঘাটে বক্তব্য দিলাম। আমি না হয় ভুলে গেছি। জনগণ তো ভোলে নাই। আপনি সুলতান মনসুর, নীতিবাক্য শোনাতেন দেশের মানুষকে, হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে আপনি যাবেন না।
শেষ পর্যন্ত এমপি হলেন তাঁর অধীনে নির্বাচনে। ভোট নিলেন খালেদা জিয়ার ছবিতে, এখন প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছাড়া আপনার চলে না। চরিত্রের এত পরিবর্তন আপনার। মেনে নিয়েছি, আপনি রাজনীতিবিদ তাই দুই-একটা কথা এ রকম বলতে হয়। তাই বলে কৃতজ্ঞতাবোধ শব্দটা কি আপনার ডিকশনারিতে নেই?’
ফেসবুক পোস্টে সুফিয়ান আরো লেখেন, ‘মরহুম শাহীন চৌধুরীর অবুঝ মেয়েদের তার বাবার আদর, মায়া থেকে বঞ্চিত করলেন আপনি, আর আজ পর্যন্ত একটা টিউবওয়েল চেয়েছিল তার পরিবার, কথা দিয়েছিলেন তার মেয়েকে চাকরি দেবেন। কী দিয়েছেন, চাকরি তো দূরের কথা একটি টিউবওয়েলও পায়নি তার পরিবার। আপনার বিবেক, কৃতজ্ঞতা বোধ বলতে কিছু আছে?’
সুফিয়ান লেখেন, ‘জনাব, এমপি হওয়ার পর দু-একবার ছাড়া কুলাউড়ার জনগণ আপনাকে দেখেনি আজ অবধি। আপনাকে কী দিইনি আমরা, আর আপনি আমাদের কী দিয়েছেন। সত্যিই কি আমরা প্রতারিত হইনি? আপনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, কুলাউড়ার মানুষকে সামান্য টিউবওয়েল বিতরণে দুর্নীতির ঊর্ধ্বে উঠতে পারলেন না। দয়া করে কুলাউড়ায় আসেন, খবর নিন দায়িত্ব পালনে সক্রিয়তা দেখান।’
সুফিয়ান আহমদের ফেসবুক পোস্টের ব্যাপারে জানতে চাইলে এমপি সুলতান মনসুর গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পানি সব মানুষের প্রয়োজন। যাদের প্রয়োজন আছে তাদের নলকূপ বরাদ্দ দিয়েছি। সুফিয়ান আহমেদের ফেসবুক মন্তব্যের বিষয়টি আমি অবগত নই, আমি এসব দেখি না। কারা আমার সঙ্গে নির্বাচনের সময় কাজ করেছে না করেছে সেটা আমি জানি। সে-ও কষ্ট করেছে খুব। গণতান্ত্রিকভাবে তার লেখার অধিকার আছে, সে লিখুক।’
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার-২ আসনের জন্য এমপি সুলতান মনসুরের বরাদ্দের ১৭২টি গভীর নলকূপের তালিকা গত রবিবার তাঁর কুলাউড়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি শেখ রুহেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এই তালিকা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তোলপাড়।

Powered by themekiller.com