কচুয়া অফিস প্রধান মফিজুল ইসলাম ববাবুলঃ
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। মৃত্যু ও সংক্রমনের প্রতিযোগীতা চলছে। একদিকে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু অন্য দিকে সংক্রমন সব মিলিয়ে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই কেউ না কেউ জ¦র, সর্দি ও কাশি আক্রান্ত, এদের বেশির ভাগই নমুনা পরীক্ষা করাতে আগ্রহী নয়। ঘরে বসেই প্যারাসিট্যামল জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো তারা হয়তো সপ্তাহ খানেক পর সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে মারা যাচ্ছেন বাড়িতে। শেষ মুহুর্তে হাসপাতালে যাওয়া এদের অনেকেরই বাচানো সম্ভব হচ্ছে না। উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে মারা গেলে মৃত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই স্বজনরা স্বাভাবিক নিয়মেই তার দাফন কিংবা সৎকার করছে। ফলে সরকারি বেসরকারি কোন তালিকাতেই তাদের নাম যোগ হচ্ছে না। ফলে প্রাণঘাতী ভাইরাসের আক্রমন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বরং তা বিস্তার লাভ করছে। প্রতিদিনই কচুয়ার কোন না কোন গ্রামে মানুষ মারা যাচ্ছে করোনা উপসর্গ নিয়ে । কিন্তু তাদের পরিবার স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ জুলাই) সকালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কচুয়া পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ডের ধামালুয়া গ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুইজন মৃত্যু বরণ করে। মৃত ব্যক্তিরা হচ্ছেন প্রধানীয়া বাড়ির আঃ জলিল (৭৫) পশ্চিমপাড়া হাজী বাড়ির রাবেয়া (৩৫)। পরিবারের দাবী তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন অন্তর তার ফেইসবুক পেইজে পোষ্ট দেন, কিছুক্ষণ আগে আমার গ্রামের ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুইজন মারা গেছে। ঘুম ভেঙ্গেছে কান্নার আওয়াজ দিয়ে। দুইজন মুমূর্ষ রোগীর জন্য অক্সিজেন সেবা প্রদানের জন্য কল দিয়েছি তাড়াতাড়ি পাঠানোর জন্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
একইদিন সকাল ৭টার দিকে গোহট উত্তর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (৫২) করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যায়। তার পরিবারের কেউ দাফন কাজে অংশগ্রহণ না করায় দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন করেন কচুয়া উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টিম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন।
কচুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সালাউদ্দীন মাহমুদ জানান, কচুয়ায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ১২৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯৭ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।তাদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ০৯ জন। টিকা গ্রহণের বিকল্প নেই। তাই সকলকে টিকা গ্রহণ করতে হবে। এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
অক্সিজেন সেবা প্রদানকারী বেসরকারি সামাজিক সংগঠন আলোর মশালের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে ৮০ জন শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীকে সেবা প্রদান করি। আমাদের হিসাব মতে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৮জন।