Breaking News
Home / Breaking News / ফরিদগঞ্জে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীর দেয়া আগুনে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ

ফরিদগঞ্জে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীর দেয়া আগুনে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ

আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ফরিদগঞ্জ: ফরিদগঞ্জে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীর দেয়া আগুনে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ। কারা সেই দুষ্কৃতকারী- এক সপ্তাহেও এর কোনো কিনারা হয়নি। মধ্য রাতের ওই অগ্নিকান্ডে বিপুল পরিমাণ মালামালসহ একটি গুদাম ঘর ও একটি মোটরবাইক সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে- দাবী গৃহকর্তার।

৯৯৯-এ ফোন করলে চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ থানা থেকে ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে ভোর রাত প্রায় সাড়ে পাঁচটায় আগুন নেভাতে সক্ষম হন। আগুনে অন্তত ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে গৃহকর্তা দাবী করেছেন। ২২-এ এপ্রিল বৃস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টায় উপজেলার ৪ নং সুবিদপুর (পঃ) ইউনিয়নের সর্দার বাড়িতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের কারণ এখনও নির্ণয় করা যায়নি। এ ব্যপারে গৃহকর্তা আবু হানিফ ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে কাউকে অভিযুক্ত করেননি। তবে, অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী দ্বারা এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে তিনি মৌখিক দাবী করেছেন।

অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার ৪ নং সুরিদপুর (পঃ) ইউনিয়নের শোল্লা গ্রামের সর্দার বাড়ির আবু হানিফ (৬০)। বাড়ির উত্তর অংশে দু’টি পাকা বসতভবন। একটির মালিক আবু হানিফ। অপরটির মালিক তার ভাই হারুনুর রশিদ। তবে, হারুনুর রশিদ ও তার পরিবার সদস্যরা ঢাকা থাকেন। ঘটনার রাতে ওই ভবনে কেউ ছিলেন না। ভবন দু’টি পাকা সীমানা দেয়াল কলাপসিবল গেইট দ্বারা ঘেরা।

ঘটনার রাতে, আবু হানিফ ও তার পরিবার সদস্যরা যথারীতি ঘুমিয়ে পরেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ ঘটিকায় কাঁচের জানালা দিয়ে বাইরে আগুনের লেলিহান শিখা চোখে পরলে আবু হানিফ-এর স্ত্রী মানছুরা বেগম (৪৫) এর ঘুম ভেঙ্গে যায়। তার ডাকচিৎকারে ঘরের অন্যদের ঘুম ভাঙ্গে। আবু হানিফ-এর ছেলে শুভ সর্দার (২২) দাবী করে বলেন, আমাদের ঘরে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইসার (অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার) থেকে স্প্রে করে মোটরবাইকের আগুন নেভাই। তবে, ততক্ষণে বাইকটি সম্পর্ণ পুড়ে গেছে। মূহুর্তে দেখি, পাকা ভবনের পাশ্ববর্তী টিনের তৈরী গুদাম ঘরে আগুন জ্বলে উঠেছে। মূহুর্তে সমস্ত ঘরে দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পরে। ওই আগুন নেভানোর কোনো উপায় ছিলো না। দ্রুত ৯৯৯-এ কল দেই। এতে, চাঁদপুর সদর ও পার্শ¦বর্তী হাজীগঞ্জ থানা থেকে ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা উপস্থিত হন। সকাল সাড়ে পাঁচ ঘটিকা নাগাদ তারা আগুন নেভাতে সক্ষম হন। কেমন করে এই আগুন লাগলো। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কেউ পরিকল্পিতভাবে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়েছে। কাহারও সাথে শত্রুতা আছে কি না। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে একটি দাখিল মাদরাসা, হেফজখানা ও একটি মসজিদ আছে। আমার বাবা আবু হানিফ এই প্রতিষ্ঠানগুলা পরিচালনা করেন। তিনি এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দাবী করেন, এ প্রতিষ্ঠান গুলাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন লোক শত্রুতা করে আসছেন। ২৯-এ মার্চ হেফজ শাখায় একজন শিক্ষক নিয়োগ ও মসজিদের ইমাম-এর দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই ইমামকে নানাভাবে নাজেহাল করে আসছিলেন মসজিদে পূর্বে ইমাম-এর দায়িত্ব পালনকারীসহ কয়েকজন ব্যক্তি। এ ঘটনায়, আমার বাবার সালিশ বৈঠকের প্রস্তাবে ঘটনার দিন সকালে মাদরাসায় বসার কথা। কিন্তু, তারা বৈঠকে না বসার কারণে পাশ্ববর্তী বাড়ির সামনে কথা কাটাকাটি হয় এবং আমাদের নির্বংশ করে ফেলবে বলে হুমকিও দেয়া হয়। আমাদের ধারণা, ওই হুমকি দাতারাই এ কাজ করেছে।

এ ব্যপারে কথা হয় গৃহকর্তা আবু হানিফ-এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ধারণা করছি বৃহস্পতিবার সকালে হুমকিদাতারা আগুন লাগিয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ব্যপারে আমি বাদি হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছি। মামলায় কারও নাম উল্লেক করিনি। নাম উল্লেখ করেননি কেনো। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কে আগুন লাগিয়েছে আমি দেখিনি, তাই নাম উল্লেখ করিনি। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সকালে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিলো যে, আমার বাড়িতে আগুন দিয়ে আমার বংশ নির্বংশ করে দিবে। তাই ধারণা করছি তারা হতে পারে। তিনি বলেন, হুমকি দাতাদের মধ্যে প্রতিবেশী মাওলানা আবদুল হাইসহ ৩/৪ জন সঙ্গী রয়েছেন। তিনি দাবী করেন, আগুনে অন্তত ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সদ্য নিয়োগকৃত ইমাম মোঃ মাঈনুল ইসলাম বলেন, মাওলানা আবদুল হাইসহ কয়েকজন ব্যক্তি আমাকে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এলাকার জনৈক মামুন-এর বাড়িতে খতমের দাওয়াতে অংশ নিতে গেলে আমাকে কাফের, ওহাবী ও নাশকতাকারী কওমী সদস্য বলে উত্যাক্ত করা হয়। তারা আমাকে এর আগ্ওে নাজেহাল করার চেষ্টা করেন। মাওলানা মামুনুল হকের নাম ইল্লেখ করে আমাকে নাজেহাল করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার বাড়ি নরসিংদি জেলার মাধবদি উজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের মিহষাশুর গ্রামে। পিতার নাম মৃত মোঃ জোহর আলী।

এ ব্যপারে, মাওলানা আবদুল হাই-এর বাড়ি গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ছেলে ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তারা অভিযোগ শুনে বলেন, এসবই মিথ্যা। তিনি বাবা ভালো মানুষ। তিনি কাল রাতে বাড়িতে ছিলেন। তার দ্বারা কারও বাড়ি ঘরে আগুন লাগানো অসম্ভব। এ সময়ে, আবদুল হাই-এর ফোন নাম্বার নিয়ে কল দিলে ফোনের স্লুইচ অফ পাওয়া যায়।

ঘটনা বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদ হোসেন বলেন, অগ্নিকান্ডের খবর শুনে ফোর্সসহ আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ বিষয়ে, গৃহকর্তা আবু হানিফ-এর আবেদনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযোগে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। পুংখানুপুংখ তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী নেয়া হবে।

Powered by themekiller.com