Breaking News
Home / Breaking News / অ‌র্ধে‌কে না‌মি‌য়ে অানা হলো ডাকঘর সঞ্চয়ের সুদ

অ‌র্ধে‌কে না‌মি‌য়ে অানা হলো ডাকঘর সঞ্চয়ের সুদ

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ডাকঘর সঞ্চয়ে আমানতের সুদহার ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিল সরকার। তিন ধরনের সঞ্চয়ী আমানতের ক্ষেত্রে যে সুদের হার প্রচলিত ছিল, তা প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। গতকাল এ-সংক্রান্ত সংশোধনী দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। স্মরণকালে আমানতের ক্ষেত্রে এত বেশি হারে আর কোনো সুদের হার কমানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এক বছরে ডাকঘর সঞ্চয়ী আমানতের নতুন সুদহার হবে ৫ শতাংশ, দুই বছর মেয়াদি সাড়ে ৫ শতাংশ ও তিন বছর মেয়াদি আমানতের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যাবে। ছয় মাস অন্তর মুনাফা উত্তোলন করলে এ সুদহার আরও কম হবে। সে ক্ষেত্রে সুদের হার যা ধার্য করা হয়েছে তা হলো : এক বছর মেয়াদি সঞ্চয়ে ৪, দুই বছর মেয়াদি সাড়ে ৪ ও তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়ী আমানতে ৫ শতাংশ সুদ পাওয়া যাবে

এর আগে ডাকঘর সঞ্চয়ী মেয়াদান্তে (তিন বছর) মুনাফা ছিল ১১.২৮ শতাংশ। এক বছরের জন্য ১০.২০, দুই বছরের জন্য ১০ দশমিক ৭০ ও তিন বছরের জন্য ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ সুদ দেওয়া হতো। আর ছয় মাস অন্তর মুনাফা উত্তোলনৃ করা হলে, সে ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ৯, দ্বিতীয় বছরে ৯.৫০ ও তৃতীয় বছরে ১০ শতাংশ হারে মুনাফা দেওয়া হতো।

‘এবার ডাকঘর সঞ্চয়ে লাগাম টানতে চাইছে সরকার’ শিরোনামে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরকার সুদহার কমিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করল।

ওই প্রতিবেদনের জন্য সুদহার কমানোর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ডাক) মো. শাহাদাৎ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উদ্বেগ জানিয়ে বলেছিলেন, ওই সঞ্চয় স্কিমে মূলত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ছোট ছোট আমানত রাখেন। এখানে সঞ্চয়পত্রের মতো খুব বেশি বিনিয়োগ আসে না। মূলত যারা ব্যাংকে আমানত রাখেন না, তারাই ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগ করেন। এ খাতের সুদহার কমালে নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি চিন্তার বিষয়।

পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ডাকঘর সঞ্চয়ে নতুন এ সুদহারের কারণে এখন কোনো আমানতকারী ডাকঘর সঞ্চয়ে আমানত রাখলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এখন কোনো বিনিয়োগকারী এক বছর অন্তর সুদে আমানত রাখলে তিনি ৫ শতাংশ সুদ পাবেন। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির কারণে তার জমা টাকা যে মান হারাচ্ছে সুদ পাওয়া যাবে তার চেয়েও কম হারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও ব্যাংকার ডি আর মোহন বলেন, মূল্যস্ফীতির তুলনায় সুদের হার কম নির্ধারণ হওয়ায় এতে আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফলে সামগ্রিক সঞ্চয়ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

Powered by themekiller.com