Breaking News
Home / Uncategorized / শার্শায় আইন অমান্য করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ইট ভাটা

শার্শায় আইন অমান্য করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ইট ভাটা

যশোর প্রতিনিধি : যশোরের শার্শায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন মানছেন না ইট ভাটা মালিকরা। সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ইট ভাটা। প্রশাসনের সহযোগিতায় অনাবাদি জমির পরিবর্তে তিন ফসলি জমিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা তৈরির লাইসেন্স প্রদান করেছেন সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ। তিন ফসলি জমির উর্বর উপরি অংশ কেটে ইট তৈরির কাজে লাগাচ্ছে। ফলে আগামী ভবিষ্যত প্রজম্মের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা মোতাবেক খাদ্য উৎপাদন ঘাটতিসহ লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে না। দেখা দেবে মারাত্মক খাদ্য ঘাটতি।
উপজেলায় প্রতিটি ইট ভাটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় গ্রাম্য সড়ক গুলি চলাচলের অনুপযোগী ও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সকল গ্রাম্য সড়ক সংস্কার ও পূনঃ নিমার্ন করা হচ্ছে। অথচ এ সকল গ্রাম্য সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত ট্রাক ও ট্রাকট্ররের মাধ্যমে ৫-৬ মেট্রিক টন পন্য পরিবহনের পরিবর্তে ১৫-২০ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করছে। ফলে ভাটা মালিকরা বাধাহীন ভাবে ঐ সকল গ্রাম্য সড়ক দিয়ে অতিরিক্ত পণ্য ইট ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচলের ফলে গ্রাম্য সড়ক গুলি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সকল যান চলাচলে প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই বরং সাধারণ জনগণের চলাচলের জন্য নির্মিত এ সকল রাস্তায় অতিরিক্ত পন্য বোঝায় ট্রাক ও ট্রাকট্ররে মাটি এবং ইট ভর্তি এ সকল যান চলাচলের কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর এসব অবৈধ যানবাহন দ্রুত গতিতে চলার জন্য প্রতি নিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক তিন ফসলি জমিতে ব্যাঙের ছাতার মত ইট ভাটা নিমার্ণের লাইসেন্স প্রদান করায় আবাদি জমি ঘাটতি হওয়া, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা সরকারি অর্থায়ানে গ্রাম্য সড়ক উন্নয়ন। স্থানীয় প্রশাসনের দেখভাল না থাকায় রাস্তাগুলি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত ইট তৈরি না করার বিধান থাকলেও একবার লাইসেন্স নেওয়ার পরে ভাটা মালিকরা প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়ন না করেই চলছে ইট তৈরির কাজ ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেই ৮০% ভাটা মালিকের। অধিকাংশ ভাটায় ১শত ২০ ফুট উচ্চ চিমনী ব্যবহার করছে।
যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ফারজানা জান্নাত স্বাক্ষরিত স্বারক নং- ০৫.৪৪.৪১০০.০০৯.১১.০০১.২০১৯ (১৬) তারিখ ১৭/০১/২০১৯ প্রাপ্ত তথ্যের প্রকাশ যশোর জেলার শার্শায় কাগজ কলমে আছে ১৪টি বাস্তবে ৩৪টি। প্রকৃত পক্ষে উপজেলায় অতিরিক্ত ২০টি ইট ভাটার কোনো খবরই রাখে না প্রশাসন। ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত হচ্ছে অথচ লাইসেন্স নেই। শার্শা মেসার্স হক ব্রিকস্, রুপালি ব্রিকস্, রুহু ব্রিকস্, অর্নব ব্রিকস্ ও মুন্নি অটো ব্রিকসসহ ২০টি ইট ভাটার । প্রতিটি ভাটা তিন ফসলি জমিতে ২০-৫০ বিঘা ফসলি জমিতে নির্মান করে অবৈধ ভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সব কিছু জানা সত্বেও এ সকল অবৈধ ইট ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিন ফসলি জমিতে ইট ভাটা নির্মান লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি সাধারণ জনগণের নিকট প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারী গণ সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন না করা। পরিবেশ দূষণ মুক্ত করার জন্য কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ঝিকরগাছার ৭নং নাভারণ ইউনিয়নের কুন্দিপুর গ্রামে নির্মিত হিরা ব্রিকস্ সরকারি বিধান না মেনে ভাটা নির্মান করায় স্থানীয় প্রশাসন উক্ত ভাটায় ইট প্রস্তুত ও পোরানো বন্ধ ঘোষনা করলেও আইনের ফাঁক ফোকর দেখিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে হিরা ব্রিকস্ তার কার্যক্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন আইন)-২০১৩, নীতিমালার আলোকে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে একাধিক বার কৃষি পন্য উৎপাদন কৃত কৃষি জমিতে ভাটা স্থাপন করা যাবে না। লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তুত করা যাবে না, যত্র তত্র ভাটা স্থাপন করা যাবে না। কৃষি জমির উর্বর মাটি দ্বারা ইট প্রস্তুত করা যাবে না, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অর্ধ-কিলোমিটার দূরুত্বে ভাটা স্থাপন করার কথা অথচ ভাটা মালিকরা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের ১-২২ ক্রমিকের কোনো আইনই মানে না।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, অচিরেই অবৈধ ইট ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Powered by themekiller.com